সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ছাত্রলীগে পদোন্নতি, এসি-ফ্রিজসহ থাকেন হলে

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে পারবেন না। তবে গঠনতন্ত্রের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির সহ-সভাপতি পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এস এম রিয়াদ হাসান।

সরকারি চাকরিজীবী হয়েও ছাত্রলীগে পদোন্নতি, এসি-ফ্রিজসহ থাকেন হলে

প্রথম নিউজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীরা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে পারবেন না। তবে গঠনতন্ত্রের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ঐতিহ্যবাহী এ সংগঠনটির সহ-সভাপতি পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এস এম রিয়াদ হাসান। এমনকি সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে অবৈধভাবে থাকছেন তিনি। টিভি, রেফ্রিজারেটর, এয়ারকুলারসহ হলে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন এ ছাত্রলীগ নেতা।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও ছাত্রলীগের উপ-সাহিত্য সম্পাদক এস এম রিয়াদ হাসানকে সহ-সভাপতি হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। সরকারি চাকরিজীবী হওয়ার পর তাকে পদ থেকে অব্যাহতি না দিয়ে উল্টো পদোন্নতি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা৷ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে সমালোচনামূলক পোস্ট করেছেন অনেকেই।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সেখানে তারিখ উল্লেখ করা ছিল ৩১ জুলাই ২০২২। সম্প্রতি রিয়াদ শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে যোগ দিয়েছেন। তবে তার চাকরিপ্রাপ্তির তারিখ ছিল এ বছরের ৫ জুলাই।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, সরকারি চাকরিজীবীদের ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কোনো সুযোগ নেই। ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, সভাপতি জয়ের ঘনিষ্ঠ ও একই এলাকার হওয়ায় এস এম রিয়াদের ক্ষেত্রে সব নিয়ম তোয়াক্কা করা হয়েছে।

জানা যায়, রিয়াদ ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তি হন। কয়েক বছর আগেই তার স্নাতক-স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে। তবুও অবৈধভাবে থাকছেন ঢাবির শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩১৩ নম্বর কক্ষে। তার কক্ষে আছে টিভি, রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কুলার।

এর আগেও করোনার সময়ে এস এম রিয়াদ হাসান হলে সদলবলে অবস্থান করেন। এরপর হল প্রশাসনের অভিযানের সময় তিনি হল থেকে পালিয়ে যান। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এসব বিষয়ে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সোহান খান জাগো নিউজকে বলেন, চাকরিজীবী হওয়ার কারণে এর আগে ছাত্রলীগ থেকে অনেককে অব্যাহতি দিয়েছিলেন জয়-লেখক। কিন্তু এখন দেখা গেছে চাকরি পাওয়ার পর রিয়াদকে অব্যাহতি না দিয়ে পদোন্নতি দিয়ে তারা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করেছেন।

তবে এ কথা বলতে এস এম রিয়াদ হাসানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিয়ান খান জয় গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি (রিয়াদ) সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বা সাংগঠনিক সম্পাদক হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এসব পদের কোনোটিই শূন্য না থাকায় আমরা তাকে তা দিতে পারিনি। তাকে সহ-সভাপতির পদ দেওয়া হয়। প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় তার মন খারাপ ছিল। যখন তাকে পদ দেওয়া হয়, তখন তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেননি। কিন্তু যেহেতু এখন তিনি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাই তার পদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শূন্য হয়ে গেছে।

জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুর রহীম বলেন, আমি এখন ঢাকার বাইরে আছি। ঘটিনাটি জেনেছি। এরইমধ্যে হল প্রশাসন খোঁজ খবর নিয়েছে। যারা মেয়াদোত্তীর্ণ, তাদের হলত্যাগের নোটিশও দিয়েছে। কেউ সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও হলে কক্ষ দখলে রেখে বিলাসিতা করা কাম্য নয়। এটা অন্য শিক্ষার্থীদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের মধ্যেও পড়ে না। আমি হলে এসে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom