গণঅভ্যুত্থান মেহনতি মানুষের কষ্ট লাঘব করেনি : সাইফুল হক

গণঅভ্যুত্থান মেহনতি মানুষের কষ্ট লাঘব করেনি : সাইফুল হক

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি, তাদের জীবনের কষ্ট লাঘব করেনি। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ সবচেয়ে বেশি জীবন দিলেও গত এক বছরে তাদের জীবন আরও দুর্বিসহ হয়েছে, তাদের প্রকৃত আয় কমেছে, দারিদ্র্য বেড়েছে। অভ্যুত্থানে শ্রমজীবী মেহনতিরা সবচেয়ে বেশি প্রতারণার শিকার হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ঢাকার আশুলিয়ার শ্রীপুরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা জেলা শিল্পাঞ্চল কমিটি আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাইফুল হক বলেন, বৈষম্য বিলোপের ডাক দিয়ে অভ্যুত্থান হলেও গত এক বছরে একদিকে সমাজে বৈষম্য আরও প্রকট হয়েছে, আর অন্যদিকে পুরোনো দুর্বৃত্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আরও জেঁকে বসেছে। দুর্বৃত্ত মাফিয়া নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে না পারলে রাজনৈতিক সংস্কার দিয়ে বেশি দূর এগুনো যাবে না।

তিনি বলেন, এই সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ম্যান্ডেট হচ্ছে বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা। নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে একদিকে নৈরাজ্য তত বৃদ্ধি পাবে। আর অন্যদিকে দেশের বহুমুখী নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়তে থাকবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে না পারলে অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠান চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যেতে পারে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহবান জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এই সাধারণ সম্পাদক।

দলের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী বলেন, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। যে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাই-আগস্টে হাজারো ছাত্র-জনতা জীবন দিল, আহত হলো, পঙ্গুত্ব বরণ করল- সেই জুলাই মাসেই আবার সেই সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সামনের সারির নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা-আক্রমণ সংঘটিত করল। এটা পরাজিত ফ্যাসিবাদীদের চরম ঔদ্ধত্যের বহিঃপ্রকাশ। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ।

তিনি বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার দায়দায়িত্ব অবশ্যই সরকারকে বহন করতে হবে।

দলের রাজনৈতিক পরিষদের আরেক সদস্য আকবর খান বলেন, গণঅভ্যুত্থানের এক বছরের মাথায় মানুষের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা হতাশায় পর্যবসিত হয়েছে। সরকারের অদূরদর্শিতার কারণে মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি সরকারকে দৃঢভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার আহবান জানান।

দলের ঢাকা জেলা শিল্পাঞ্চল কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা অরবিন্দু বেপারী বিন্দুর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন-বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, আহত জুলাই যোদ্ধা ফায়েজুর রহমান মনির, শিল্পাঞ্চল কমিটির নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, মোহাম্মদ লিটন মন্ডল, মোহাইমিনুল হক, আল আমিন প্রমুখ।

বৃষ্টিবিঘ্নিত সমাবেশের শুরুতে শহীদ আবু সাঈদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দুই শহীদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফসহ গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।