Ad0111

সরকার খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার চক্রন্ত করছে: মির্জা ফখরুল

আইনমন্ত্রী বললেন, এখানে কোনো আইনেই সুযোগ নেই তাকে বিদেশে পাঠানোর। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আইনে সুযোগ রয়েছে। ওই যে তারা আইনের কথা বলছেন ৪০১, সেই ৪০১ এর মধ্যেই বলা আছে সম্পূর্ণ এখতিয়ারটা সরকারের।

সরকার খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার চক্রন্ত করছে: মির্জা ফখরুল
বক্তব্য রাখেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

প্রথম নিউজ, ঢাকা: সরকার বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জীবন থেকে সরিয়ে দেয়ার চক্রন্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বসুন্ধরা এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে গুরুতর অসুস্থ দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে সরকারের নানা বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে টেনে তিনি এই অভিযোগ করেন। সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের নসরুল হামিদের ন্যাশনাল পিপলস পার্ট-এনপিপির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের(সরকারের) লক্ষ্য একটাই-এখানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে এখন তারা জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছে, চক্রান্ত করছে। সেই কারণে তারা তাকে বিদেশে চিকিতসা নেয়া সুযোগটা দিতে চাচ্ছে না।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আবেদন করেছিলো। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকালও আইনমন্ত্রী বললেন, এখানে কোনো আইনেই সুযোগ নেই তাকে বিদেশে পাঠানোর। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আইনে সুযোগ রয়েছে। ওই যে তারা আইনের কথা বলছেন ৪০১, সেই ৪০১ এর মধ্যেই বলা আছে সম্পূর্ণ এখতিয়ারটা সরকারের। সরকার চাইলে তাকে( বেগম খালেদা জিয়া) মুক্তি দিতে পারেন, সরকার চাইলে তাকে বিদেশে পাঠাতে পারেন চিকিৎসার জন্যে, সরকার চাইলে পুরোপুরি মওকুফ করে দিতে পারেন।
আরো কর্মসূচি আসবে বলে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণঅনশনের আহবান জানিয়েছি। এটা আমাদের কেন্দ্রীয় অফিসে অনুষ্ঠিত হবে। জায়গা তো পাওয়া যায় না। আমরা অনেক জায়গা চেয়েছিলাম, তারা জায়গা দেয়নি, আমরা কেন্দ্রীয় অফিসে করছি। সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এই কর্মসূচি হবে। আমরা আশা করব যে, তারা(২০ দলসহ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল) সবাই আমাদের এই গণঅনশনে একাত্মতা ঘোষণা করবেন। আমরা তাদের আহবান জানাচ্ছি যে, আপনারা দয়া করে আমাদের কেন্দ্রীয় অফিসে আসবেন। আসুন,দেশনেত্রী বিদেশে চিকিৎসার যেন সুযোগ পান সেই আন্দোলনটা জোর করি। সেখানে থেকে আমরা পরবর্তিতে আরো কর্মসূচি আছে তা আমরা ঘোষণা করবো।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন ছাড়া কোনো মতেই এই দানবীয় সরকারকে সরানো সম্ভব হবে না। আজকের এই আলোচনায় যে প্রস্তাবগুলো এসেছে যে আপনার যুগপত অথবা এক মঞ্চ সেটা পরে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা শুরু করি আমাদের জায়গা থেকে। সেই আহবান আমি আগেও জানিয়েছি, এখনো জানাচ্ছি। আমাদের দল থেকে পরিস্কার আহবান আছে আসুন আমরা সবাই এক সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে মিনিমাম দাবির ভিত্তিতে মূল দাবি তো একটাই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এই বিষয়ে আমরা একসাথে আন্দোলন করি এবং এদের হাত থেকে দেশকে, জনগনকে রক্ষা করি। এটা সত্য যে এটা করতে যদি আমরা ব্যর্থ হই ভবিষ্যত প্রজন্ম কখনোই আমাদের ক্ষমা করবে না।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে লড়ছেন। তিন বারের প্রধানমন্ত্রী, এই সময়ে বাংলাদেশে তার মতো জনপ্রিয় কোনো নেতা নাই। উনি বিনা চিকিৎসায় প্রায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছেন।কত ধরনের জটিলতা শরীরের মধ্যে আছে। ওই এভারকেয়ার হাসপাতালের ডাক্তাররা বলেন, মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি হাসপাতালে চিকিৎসা ছাড়া তার ডায়োগনাইসিস করাই তো সম্ভব হচ্ছে না পুরোটা। যখন এরকম করে এতো বড় একজন নেত্রী মৃত্যুর মুখোমুখি তখন আরেক নেত্রী ক্ষমতার মদমত্তায় এমন নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন যেগুলো দেখলে গা ঘিনঘিন করে। সবাই দেখেছেন। মনে হচ্ছে একবার ক্ষমতা পাওয়ার পরে এই ক্ষমতাকে মূখ মনে করেন। যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন এবং সেই কারণে মিথ্যাচার এরকম করে করছেন যার কোনো সীমা-পরিসীমা নাই।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, একটা আইন মন্ত্রী বানিয়েছেন একটা অপদার্থ মূর্থ আইনমন্ত্রী। ঠিক মতো আইনও জানে না, ইতিহাস জানে না। এই বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামীর বিদেশে চিকিতসা করতে যাওয়ার ইতিহাস নতুন নয়। উদাহরণ আছে। এই বাংলাদেশে যে বলে আমরা সমস্ত উন্নত চিকিতসার আমরা ব্যবস্থা করেছি। আমি বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে বাইরে আসবার পরে সাংবাদিকদের বলেছিলাম, তাই যদি সত্য হয় কত বড় অসুখ নিয়ে রাষ্ট্রপতি জার্মানীতে, জাপানে, লন্ডনে চিকিৎসা করতে যান আমাদেরকে বলেন। কোন অসুখ নিয়ে শেখ হাসিনা কয়েকবার করে লন্ডনে যাচ্ছেন আমাদেরকে বলেন। আপনাদের বেলার লীলা খেলা। যখন মনে হবে লন্ডন যাবেন, আমেরিকা যাবেন, ইন্ডিয়া যাবেন। তোফায়েল আহমেদ সাহেব কতদিন থাকলেন, মোহাম্মদ নাসিম(বর্তমানে প্রয়াত) এখন নাই কিন্তু গেছেন। অথচ বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে তারা সবাই বলেছেন, আমরা আইনের দ্বারা বাঁধা আছি। সমস্ত আইন একটার পর একটা লঙ্ঘন করেছে তারা। এখন পর্যন্ত করছে। ওদের তো বৈধতাই নেই।
মান্না বলেন. চিকিৎসার অভাবে বেগম খালেদা জিয়ার মতো এতবড় নেত্রী মারা যাবে-এটা চুপচাপ বসে দেখা যাবে না। সেই জন্যই এই লড়াই আমাদের সবার। আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই লড়াই করতে হবে।
এনপিপি‘র চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, ইসলামী ঐক্যজোটের এম এ রকিব, জাগপার খন্দকার লুতফর রহমান, এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির আবু তাহের, ন্যাপ ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর প্রমূখ নেতারা বক্তব্য রাখেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news