সাবেক সাংসদ গিয়াসের বাড়িতে পুলিশী অভিযান
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার কলাবাগ এলাকায় গিয়াস উদ্দিনের নিজস্ব বাস ভবন (মুক্তিযোদ্ধা নিবাসে) এই অভিযান চালায় পল্টন মডেল থানা পুলিশ
রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের বাসায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৫নং ওয়ার্ডের সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার কলাবাগ এলাকায় গিয়াস উদ্দিনের নিজস্ব বাস ভবন (মুক্তিযোদ্ধা নিবাসে) এই অভিযান চালায় পল্টন মডেল থানা পুলিশ। এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সহযোগিতায় ছিল। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যা চেষ্টার মামলায় পল্টন থানা পুলিশ ও আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ যৌথভাবে এই অভিযান চালায়। তবে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে রাজধানীর পুরানা পল্টনে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে এলোপাথারী ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরেই স্থানীয়রা হামলাকারীদের একজন জুয়েল মীর ওরফে পাগলা জুয়েলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করে। আর ঘটনার পর দিন মামুন মাহমুদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সাগর সিদ্দিকী। ওই ঘটনায় মামুন মাহমুদের স্ত্রী বদরুননাহার বাদি হয়ে আটক জুয়েল মীরকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামী করে পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে পুলিশের তদন্তে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের ছোট ছেলে গোলাম মো. কাউসার ওরফে রিফাতের নাম উঠে আসে। রিফাতের হয়ে খুনি ভাড়া করেন তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি ফতুল্লার বাসিন্দা মো. হৃদয়। আর হামলাকারী মো. জুয়েল মীরকে মামুন মাহমুদের অফিস ও তার ছবি দেখিয়ে দেয় জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি গ্রেপ্তার দিদার আলম ওরফে সাগর সিদ্দিকী।
এদিকে ঘটনার দিন দুপুর থেকে ঘটনাস্থলের অদূরে মুক্তাঙ্গনে নিজের মাইক্রোবাসে অবস্থান করছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন ও সাবেক সাংসদ গিয়াস উদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী পল্টু কর্মকার। পল্টন মডেল থানা পুলিশের তদন্তে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের এসব তথ্য উঠে এসেছে। ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলর ইকবাল ও রিফাত পলাতক রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।
ওদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট পল্টন মডেল থানার একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঘটনার পরিকল্পনাকারী রিফাত। তার হয়ে খুনি ভাড়া করে হৃদয় রিফাত ও হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা গেলে ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। তিন দিনের রিমান্ডে থাকা সাগর সিদ্দিকী পুলিশকে ঘটনার বিষয়ে নানা তথ্য দিচ্ছে। পুলিশ সেগুলো যাচাই বাছাই করে দেখছে।
ঘটনার দিন দুপুরে নাসিকের ২নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন ও পল্টু কর্মকার নামে দু’জন একটি মাইক্রোবাসে করে অবস্থান করছিল বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় কাউন্সিলর ইকবালও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews