প্রথম নিউজ, অনলাইন: ভারতের আধিপত্যের কাছে পাকিস্তান কখনো মাথানত করবে না। ভারতকে এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, ভারত যদি পানি আটকে রাখে তাহলে তাদেরকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।
রবিবার (১৮ মে) জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এসব কথা বলেন। একই সঙ্গে পাকিস্তান শান্তি চায় জানিয়ে তিনি বলেন, পাকিস্তানের ভিতরে যেসব সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আছে তার মদত দিচ্ছে ভারত।
আইএসপিআর প্রধান বলেন, আমি আশা করি সেই সময়টা যাতে না আসে। তবে, সত্যিই যদি সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বিশ্ব দেখবে এর পরিণতি এবং আমরা বছরের পর বছর ধরে লড়াই করব। ২৪ কোটিরও বেশি মানুষের পানি কোনোভাবেই বন্ধ করে রাখা যাবে না। কেউ যেন পাকিস্তানের পানি বন্ধ করার সাহস না করে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটি পেশাদার সশস্ত্র বাহিনী যারা তাদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলে এবং রাজনৈতিক সরকারের নির্দেশাবলী এবং তাদের প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান প্রসঙ্গে আহমেদ শরীফ বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতি মেনে চলবে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে আস্থা তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আরটি আরবিকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা উদ্ধত জাতি নই, আমরা একটি ‘সিরিয়াস’ জাতি। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো শান্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ এবং বিচক্ষণ দেশ পাকিস্তানের জনগণের মনোভাব কী, তা আরও ভালোভাবে বোঝে। এ সময় ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে কূটনীতিকদের অসাধারণ কাজেরও প্রশংসা করেন পাক আইএসপিআর প্রধান।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহতের ঘটনা ঘিরে তলানিতে নেমে যায় ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক। এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারত, যার মধ্যে অন্যতম ১৯৬০ সালে হওয়া সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত। জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয় ভারতের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও হুমকি-ধমকিতে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে থাকে পরিস্থিতি, যা শেষ দিকে গড়ায় সংঘাত পর্যন্ত; সৃষ্টি হয় যুদ্ধ পরিস্থিতির। টানা চারদিনের সংঘাত শেষে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় উভয় দেশ।