সংকটের সীমানায় অর্থনীতি: আইএমএফ
বাণিজ্য-ঘাটতি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ ও মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সংকটের সীমানায় রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি।
প্রথম নিউজ, অনলাইন:
বাণিজ্য-ঘাটতি, ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচ ও মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় সংকটের সীমানায় রয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। অথচ বৈশ্বিক মহামারি এবং মহামারি-পরবর্তী সময়ে বিশ্বে অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে, তার আগে বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিই ছিল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বা ডিএমডি অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহর ঢাকা সফর উপলক্ষে আইএমএফের ‘ফরেন ব্রিফ’ অংশে গতকাল শনিবার এসব কথা বলা হয়েছে। আইএমএফের ডিএমডি গতকাল দুপুরে বাংলাদেশে এসেছেন। পাঁচ দিনের সফর শেষ করে ১৮ জানুয়ারি ঢাকা ছাড়বেন তিনি।
আইএমএফ বলেছে, অর্থনীতি সংকটের সীমানায় থাকার কারণে বাংলাদেশের ভোক্তাদের আচরণে পরিবর্তন এসেছে। কম খরচ করতে পারছেন ভোক্তারা। অর্থনৈতিক অগ্রগতিও ক্ষুণ্ন হচ্ছে। বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি সহনশীল রাখতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতাকে সমর্থন করে আইএমএফ। এ জন্য ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ-সহায়তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ঢাকা সফর করছেন মনসিও সায়েহ।
এখন সময় একটু খারাপ (ক্রিটিক্যাল টাইম) বলে জরুরি ভিত্তিতে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বাজেট-সহায়তা বাবদ অর্থের দরকার—এ কথা উল্লেখ করে গত জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ঋণ চায় বাংলাদেশ। এরপর আইএমএফ গত অক্টোবর-নভেম্বরে ১৫ দিনের জন্য ঢাকায় একটি মিশন পাঠায়। এখন ঋণ আলোচনা চূড়ান্ত করতে সংস্থাটির ডিএমডি ঢাকায় এসেছেন।
ডিএমডির ঢাকা সফর উপলক্ষে আইএমএফের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের এ ঋণ পাওয়ার পটভূমিও তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়, বিশ্ববাজার উত্তপ্ত এবং ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে মার্কিন ডলার, যা আঘাত করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। এ কারণে আইএমএফের দিক থেকে সহায়তা দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
আইএমএফ আরও বলেছে, সংস্থাটির কাছ থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ পাচ্ছে, তা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সহায়তা করবে। রাষ্ট্রীয় তহবিল ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় আইএমএফের ঋণ একটি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হবে বলেও মনে করছে আইএমএফ।
আইএমএফের মতে, সংস্থাটির বাড়তি ৪৫০ কোটি ডলার স্বল্প মেয়াদে জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির চাপ প্রশমিত করবে। এ ছাড়া আইএমএফের পরামর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতেও সহায়তা করবে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, মধ্যমেয়াদি স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি কমানো ও রপ্তানি বৃদ্ধি।