শনিবার ঢাকায় আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট
প্রথম নিউজ, ঢাকা : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে ঢাকায় আসছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস হোর্তা। আগামী ১৪-১৭ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ সফর করবেন। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। এ সফরে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান পর্যায়ের বাংলাদেশে এটি প্রথম সরকারি হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এ সরকারি সফরে তিনি আগামী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তিমুর লেস্তের রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের ১৯ সদস্যের প্রতিনিধিদলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির মুখ্য উপদেষ্টাসহ উচ্চপর্যায়ের সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
সচিব বলেন, তিমুর লেস্তের স্বাধীনতা লাভের পরপরই ২০০২ সালের ৭ জুন বাংলাদেশ তিমুর-লেস্তেকে স্বীকৃতি দেয়, যার মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। তিমুর লেস্তের স্বাধীনতা অর্জনের পর বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিমুর লেস্তে আজও বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে।
তিনি বলেন, সফরের প্রথম দিন তিমুর লেস্তের রাষ্ট্রপতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন। এর পরপরই দুই দেশের মধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন রাতে তিমুর লেস্তের রাষ্ট্রপতি তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেবেন এবং ১৬ ডিসেম্বর তিনি বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, তিমুর লেস্তের রাষ্ট্রপতি ১৬ ডিসেম্বরে সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করবেন। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও অংশ নেবেন তিনি। পরদিন ১৭ ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) কর্তৃক আয়োজিত পাবলিক লেকচারে ‘দ্য চ্যালেঞ্জস অব পিসি ইন দ্য কনটেম্পরারি ওয়ার্ল্ড’ বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন। একই দিন বিকেলে তিনি বাংলাদেশের ছাত্র এবং তরুণদের উদ্দেশ্যে তার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিজ্ঞতা, তার নেতৃত্ব, দীর্ঘ সংগ্রামে জনগণের ভূমিকা ও স্বাধীনতা পরবর্তী তিমুর লেস্তের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে বক্তব্য রাখবেন।
তিনি বলেন, তিমুর লেস্তের রাষ্ট্রপতির এই সরকারি সফরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চুক্তিটি হলো অফিসিয়াল এবং কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি। সমঝোতা স্মারক হলো- দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শমূলক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক। এই সফরকালে বাংলাদেশে তিমুর-লেস্তে অনারারি কনস্যুলেট খোলার বিষয়েও ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।