আ.লীগ দেশের মানুষ যাতে মাথা খাড়া করে দাঁড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা করেছিল : সেলিমা রহমান
প্রথম নিউজ, ঢাকা : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিনা রহমান বলেছেন, ‘আজ শেখ হাসিনা যদি সোনা দিয়ে দেশকে মুড়িয়ে দেয়, তবুও জনগণ এই সরকারকে ভোট দেবে না। তারা এটা বুঝে গেছে বলেই আজ নানাভাবে নিপীড়ন করছে। আপনাদের মনে আছে, পাকিস্তান বাহিনী যখন এই দেশ থেকে চলে গিয়েছিল, তখন কীভাবে এই দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। এই দেশের মানুষ যাতে মাথা খাড়া করে দাঁড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা করেছিল। আজ ঠিক একইভাবে শেখ হাসিনা যদি ক্ষমতায় না থাকতে পারে, তাহলে চেষ্টা করবে দেশকে ধ্বংস করতে।’
সোমবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক চাপ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ।
সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা দেখেছি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন কারা। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে সাধারণ মানুষ আর আমাদের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া। এখন সমগ্র দেশের জনগণ আর আমরা বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছি। আমি সেদিন পত্রিকায় দেখলাম বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন লুটেরা মডেল। কাল দেখলাম বেসিক ব্যাংকের নয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করে একজন সচিব পদে উন্নীত হয়েছেন। দেখা যাচ্ছে, যত দুর্নীতিবাজ যত লুটেরা যত মানিলন্ডারিং সবকিছু করছে একটি মাত্র দল থেকে, সেটা হচ্ছে সুবিধাগোষ্ঠী দল– বর্তমান আওয়ামী লীগ ও তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যারা। যারা আজ দেশের জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। বাসে আগুন লাগিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছিল। ১১ জনকে হত্যা করেছিল। সেখানে আমরা (বিএনপি) কিন্তু ছিলাম না। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপির ওপরে জঙ্গি বলে, সন্ত্রাসী বলে দোষ চাপাচ্ছিল। আসলে সন্ত্রাস কারা? সন্ত্রাস হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আপনারা কি ভুলে গিয়েছেন রমনা পার্কের সেই সিরিজ বোমা হামলার কথা? সমস্ত কিছু করেছে কিন্তু আওয়ামী লীগ। কিন্তু সেটাকে জঙ্গি বলে বিশ্ব বিবেককে ভুল বুঝানোর চেষ্টা করেছিল বিএনপির ওপর সমস্ত দোষ চাপিয়ে। আজ বিশ্ব বিবেক নাড়া দিয়েছে। নাড়া দিয়েছে কেন? কারণ তারা দেখতে পাচ্ছে বিএনপি সমগ্র রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে একটা মাত্র লক্ষ্যে পৌঁছেছে। সেটা হচ্ছে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না, হতে দেওয়া হবে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘‘বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফর করে হাত পেতে ভিক্ষা জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু কোথাও কোনো সুবিধা করতে পারেননি। তাই আজ আমরা একটা কথাই বলতে চাইছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আমরা কোনো নির্বাচন করব না। কিন্তু তার জন্য আমাদের রাজপথে থাকতে হবে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এখনো কারাগারে বন্দি। তিনি কারাগারে যাওয়ার আগে বলে গিয়েছেন ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’। আর আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন ‘বাংলাদেশ যাবে কোন পথে দেখা হবে রাজপথে।’ তাই আমাদের ফয়সালা হবে রাজপথে। এই রাজপথে শুধু আমরা বিএনপি না, দলমত নির্বিশেষে সকলকে থাকতে হবে।’’
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন রোকন, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।