শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মারার ঘটনায় মেয়রকে অপসারণের দাবি
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যানারে এসব দাবি জানানো হয়।
প্রথম নিউজ, জামালপুর: বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মারার ঘটনায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহর অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যানারে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেন। দেওয়ানগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হকের সভাপতিত্বে ও বাঘারচর আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মো. তাপসের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মাদারের চর এ জি আই দাখিল মাদ্রসার সুপার আসমত আলী, পোল্ল্যাকান্দি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম, লংকার চর দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোখলেছুর রহমান ও হাতিভাঙ্গা এ বি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক চাঁন মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত এবং প্রকাশ্যে গালিগালাজ করা মানে, সর্বস্তরের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অপমান করা। এই অপমান মেনে নেওয়ার মতো নয়। একজন মেয়র এভাবে কাউকে লাঞ্ছিত করতে পারেন না। শিক্ষা কর্মকর্তাকে থাপ্পড় মারা মানে, সব শিক্ষককে থাপ্পড় মারার শামিল। এ জন্য তাঁরা দ্রুত মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করে মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহর উপযুক্ত শাস্তি চান। তা না হলে সর্বস্তরের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করা না হলে, কোনো শিক্ষক আগামী ইউপি নির্বাচনে প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিংক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন না।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মাঠে উপজেলা প্রশাসন বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানের উপস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ। ভোর থেকে ওই মাঠের শহীদ মিনারে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করছিলেন। একপর্যায়ে দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। উপস্থাপক শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মাইকে প্রশাসন ও বিভিন্ন সংগঠনের নাম ঘোষণা করছিলেন। পৌরসভার নাম ৫ নম্বরে ঘোষণা করার কারণে মেয়র প্রকাশ্যে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও তাঁকে থাপ্পড় মারেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে ভুক্তভোগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন।
দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ভুক্তভোগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মেহের উল্লাহ বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতেই মামলা করেছেন। মামলায় মেয়রকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। মামলার পর থেকেই মেয়র আত্মগোপনে আছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য মেয়র মো. শাহনেওয়াজ শাহানশাহের মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে অন্য কেউ ফোনটি ধরে ‘মেয়র মহোদয় একটু ব্যস্ত, পরে কথা বলবেন’ বলে ফোনটি রেখে দেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: