ময়মনসিংহে দেউলার খালের সেতু এখন মরণ ফাঁদ

প্রাণ হাতে নিয়ে পার হতে হয় সেতু

ময়মনসিংহে দেউলার খালের সেতু এখন মরণ ফাঁদ
দেউলার খালের সেতু

প্রথম নিউজ, ময়মনসিংহ: ৩৪ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল সেতুটি। দীর্ঘ দিনেও সংস্কার না হওয়ায় তা এখন পরিণত হয়েছে মরণ ফাঁদে। ভেঙে গেছে রেলিং, মাঝখানে স্লাব ভেঙে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গর্তের। শুধু তাই নয়, রড বেরিয়ে গিয়ে পড়ে আছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। এতে যান চলাচল তো বন্ধ রয়েছেই, এমনকি প্রাণ হাতে নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে মানুষকে। তবুও বাধ্য হয়ে সেতু ব্যবহারকারী হাজারো মানুষের প্রশ্ন, ধুঁকতে থাকা সেতুটি নির্মাণ হবে কবে?

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার কেশরগঞ্জ বাজার থেকে ঘাটাইলের গারো বাজার সড়কে রাঙ্গামাটিয়া বাজারের পাশে দেউলার খালের ওপর ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুর অবস্থান। সেতুটির এমন বেহাল অবস্থার কারণে ওই এলাকার পাঁচটি গ্রামের মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। সেতু দিয়ে যান চলাচলের কোনো উপায় নেই। যদি কোনো রিকশা বা ভ্যানও পার হতে চায়, তাতে প্রয়োজন হয় চার-পাঁচজন মানুষের সহযোগিতা।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি দিয়ে প্রতিনিয়ত উপজেলায় উৎপাদিত ফসল, শাক-সবজি, মৌসুমি ফলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচল করে কয়েকশ পণ্যবাহী যানবাহন। এ ছাড়া ব্যাটারি ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। এখন সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় এসব যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ড.আবু বকর সিদ্দিক প্রিন্স বলেন, পাঁচটি গ্রামের সংযোগস্থল এই সেতু। উপজেলার অধিকাংশ সবজি এসব গ্রাম থেকে পাঠানো হয়। সেতু ভাঙার পর সবজি মাথায় নিয়ে পার করতে হয় কৃষকদের। ফলে কৃষকরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আবুল হোসেন নামে এক অভিভাবক বলেন, প্রতিদিন সাইকেলে করে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছাতে যাই। কিন্তু এই সেতুর কাছে সাইকেল থেকে নেমেই প্রতিদিন পার হতে হয়। বিপজ্জনক সেতুতে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

আলী আহাম্মদ নামে এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ওই খালের ওপর নতুন সেতু তৈরি হবে বলে অনেক দিন ধরেই শুনে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাধ্য হয়ে এখন প্রতিদিন বিপদের আশঙ্কা নিয়েই সেতু দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালিনা চৌধুরী সুষমা বলেন, এটি এলজিইডির কাজ। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনেক আগেই এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে।

ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. মাহাবুব মুর্শেদ বলেন, ১৯৮৭ সালে নির্মিত ৯ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী। ইতোমধ্যে সেতুটি পরিদর্শন করে নতুন করে নির্মাণের জন্য ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরে (এলজিইডি) প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই প্রকল্পের অনুমোদন হবে।