মুমিনুলের বাঁ-হাতের অবিশ্বাস্য ক্যাচ, বিপদে আফগানিস্তান

১১৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ব্যাট করছিলেন আফগানিস্তানের আমির হামজা এবং করিম জানাত।

মুমিনুলের বাঁ-হাতের অবিশ্বাস্য ক্যাচ, বিপদে আফগানিস্তান

প্রথম নিউজ, স্পোর্টস ডেস্ক: একের পর এক উইকেট তুলে নিচ্ছেন পেসার এবাদত হোসেন। এরই মধ্যে তার ঝুলিতে জমা পড়েছে চারটি উইকেট। তবে যে পরিমাণ ক্যাচ মিস হয়েছে, এতক্ষণে হয়তো আফগানরা অলআউট হয়ে যেতো এবং এবাদতেরও ফাইফার পূর্ণ হয়ে যেতো। তবে, সহজ সহজ ক্যাচ মিস হলেও বাঁ-হাতে অবিশ্বাস্য এক ক্যাচ ধরেছেন মুমিনুল হক।

১১৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ব্যাট করছিলেন আফগানিস্তানের আমির হামজা এবং করিম জানাত। দু’জনের ১২ রানের জুটিতে আফগানদের বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এবাদতের একটি শট বল লাফিয়ে উঠলে সেটাকে ঠেকাতে যান আমির হামজা। বল ব্যাটের নিচের কানায় লেগে শট লেগে ক্যাচ উঠে যায়। শট ফাইন লেগে দাঁড়ানো ছিলেন মুমিনুল। বলটি ধরতে বাঁ-হাত বাড়িয়ে বামপাশে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। অবিশ্বাস্য দ্রুততায় একহাতে ক্যাচটি তালুবন্দী করে নেন। ৬ রানে আউট হয়ে যান আমির হামজা।

মুমিনুলের অবিশ্বাস্য ক্যাচে ৭ম উইকেটের পতন ঘটে আফগানদের। এ সময় তাদের রান ছিল ১২৮। এবাদতের হয়ে গেলো ৪ উইকেট। এ রিপোর্ট লেখার সময় আফগানিস্তানের রান ৩৩ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৯। ১৬ রান নিয়ে ব্যাট করছেন করিম জানাত এবং তার সঙ্গী ইয়ামিন আহমদজাই শূন্য রানে ব্যাট করছেন।

৩৫ রানে ৩য়, ৫১ রানে ৪র্থ উইকেট হারানোর পর আফগানিস্তানকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন নাসির জামাল এবং আফসার জাজাই জুটি। শুধু টেনে তোলাই নয়, এই জুটি ভয়ঙ্করও হয়ে উঠছিলো বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। ৬৫ রানের মোটামুটি মাঝারি মানের একটি জুটি গড়ে ফেলেন তারা। তবে, তাদেরকে খুব বাড়ত দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ এবং এবাদত হোসেন। প্রথমে জুটি ভাঙেন মিরাজ। এরপর জুটির বাকিজনকেও সাজঘরে ফিরিয়ে দেন এবাদত হোসেন।

৪ উইকেটে ১১৬ রান তুলে ফেলেছিলো আফগানরা। উইকেটেও সেট হয়ে গিয়েছিলো নাসির এবং আফসার। এরপরই ২৫তম ওভারে মিরাজের দারুণ এক ঘূর্ণি বলে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে যান নাসির জামাল। ৪৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হন তিনি। এরপর আফগানদের একই অবস্থানে রেখে আউট হয়ে যান আফসার জাজাইও। ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই এবাদতের একটি শট বলকে খেলতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন আফসার। স্কয়ার লেগে বলটি তালুবন্দী করেন শরিফুল ইসলাম। ৪০ বলে ৩৬ রান করে আউট হন আফসার।

এর আগে মধ্যাহ্ন বিরতি থেকে ফিরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় অধিনায়ক হাশমত উল্লাহ শহিদির। দলীয় ৫১ রানে ১৬ বলে ৯ রান করে শরিফুলের বলে আউট হয়ে যান তিনি। এরপর মিডল অর্ডারে নাসির জামাল এবং আফসার জাজাইয়ের ব্যাটে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানরা। দু’জন মিলে এরই মধ্যে ৫৬ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন। রানও তুলছেন দ্রুত গতিতে। এর আগে শরিফুলের ব্রেক থ্রু, সঙ্গে এবাদত হোসেনের জোড়া উইকেট। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৩৮২ রানের জবাব দিতে নেমে ৩৫ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। এই ৩৫ রানেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় তারা।

২.৪ ওভার বল করে ২ উইকেট নিয়েছেন পেসার এবাদত হোসেন। তিনি ফিরিয়েছেন আফগান ওপেনার আবদুল মালেক এবং ওয়ান ডাউনে নামা ব্যাটার রহমত শাহকে। এর আগে ইবরাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। ২ রান নিয়ে হাশমত উল্লাহ শহিদি ব্যাট করছেন।

শরিফুলের বলে ইবরাহিম জাদরান আউট হতে পারতেন দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলেই। কিন্তু প্রথম স্লিপে থাকা বলটি যদি ঝাঁপিয়ে পড়ে লিটন দাস ধরার চেষ্টা না করতেন, তাহলে সেটি হয়তো নাজমুল হোসেন শান্তই তালুবন্দী করে নিতে পারতেন। লিটন চেষ্টা করে ধরতে পারেননি। শান্তও বলে হাত লাগাতে পারেননি। বেঁচে যান ইবরাহিম। কিন্তু আফগান এই ওপেনারকে ঠিকই ফিরিয়ে দিলেন শরিফুল ইসলাম। সেই লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেই। সে সঙ্গে আফগান শিবিরে প্রথম আঘাতটি হানলেন এই বাঁ-হাতি পেসার।

আফগানিস্তানের দলীয় ১৮ রানের মাথায় পড়লো প্রথম উইকেট। ১৭ বল খেলে ৬ রান করে আউট হন আফগান ওপেনার ইবরাহিম জাদরান। এরপর আরেক ওপেনার আবদুল মালিককেও ফিরিয়ে দেন অন্য পেসার এবাদত হোসেন। ৭ম ওভারের ৫ম বলে আবদুল মালিকের ব্যাটের কোনায় লেগে বল চলে যায় তৃতীয় স্লিপে। সেখানে জাকির হাসান ক্যাচ ধরেন। যদিও রিপ্লাই দেখে থার্ড আম্পায়ার আউট ঘোষণা করেন। ২৪ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট।

১১ রানের জুটি গড়ে রহমত শাহ আউট হলেন এবাদতের বলে। তার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা কোমর সমান বলটিকে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে মিডউইকেটে তাসকিনের হাতে গিয়ে জমা পড়ে। ৯ রানে আউট হন রহমত শাহ। এর আগে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ৩৮২ রানে। ৫ উইকেটে ৩৬২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২০ রান যোগ করেই অলআউট হয়ে যায় টাইগাররা। ৪৮ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজ এবং ৪৭ রান করে আউট হন মুশফিকুর রহিম।

টেস্টের প্রথমদিন ১৪৬ রান করেন নাজমুল হোসেন শান্ত, ৭৬ রান করেন মাহমুদুল হাসান জয়। আফগান অভিষিক্ত পেসার নিজাত মাসুদ একাই নেন ৫ উইকেট।