ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে গানের মিছিলে পুলিশের বাধা
গতকাল রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়।

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ভোটাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে গানের মিছিল করেছে লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকরা। গতকাল রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গানের মিছিলটি গুলিস্তানে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশের বাধায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে শেষ হয়। এ সময় প্রতিবাদী লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়। জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শুরু হওয়া গানের মিছিলজুড়ে ছিল বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একাধিক গান।
গানের মিছিলটি শুরু হয়- ‘কারার ঐ লৌহকপাট/ ভেঙে ফেল কর রে লোপাট/ রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী’ দিয়ে। এরপর একে একে জাতীয় কবির অন্যান্য কালজয়ী গান- ‘তোমরা ভয় দেখিয়ে করছ শাসন/ জয় দেখিয়ে নয়/ সেই ভয়ের টুটি ধরবো চেপে/ করবো তারই লয়’সহ ‘দুর্গম গিরি কান্তার মরু/ দুস্তর পারাবার হে/ লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা হুঁশিয়ার’। প্রতিবাদী লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকদের হাতে শোভা পায় বিভিন্ন প্লাকার্ডও। যেখানে লেখা ছিল- ‘ভোটাধিকার নেই, নাগরিক অধিকারও নেই’, ‘ভোটাধিকার আমার মতপ্রকাশেরই অধিকার’, ‘লাথি মার ভাঙরে তালা, যতসব বন্দিশালা’, ‘আমার কণ্ঠ আমার কলম স্তব্ধ করা যাবে না’ ইত্যাদি। পুলিশের বাধার পর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে বক্তারা বলেন, আজকের দেশ একটি কারাগারে পরিণত হয়েছে।
আমরা আজকে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারি না। আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমরা চাল-ডালের স্বাধীনতা চাই, আমরা রাস্তায় নিরাপদে হাঁটার স্বাধীনতা চাই, আমরা বাড়িতে পৌঁছানোর স্বাধীনতা চাই। আমরা সংঘাত চাই না, আমরা শান্তি চাই। তারা বলেন, আমরা ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে আজকের এই গানের মিছিল শুরু করেছি। যেটি শাহবাগ থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তানে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে গিয়ে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হয়েছে। এই পুলিশ জনগণের পুলিশ নয় বরং এই পুলিশ সিন্ডিকেটের পুলিশ।
এরা আমাদের ভোট দিতে বাধা প্রদান করে আবার এরাই ভোটের আগের রাতে ভোট প্রদান করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলবো গানের মিছিলটি কোনো রাজনৈতিক ইস্যু না। এখানে আমাদের জাতীয় কবির গান গাওয়া হচ্ছে। সেটা কেন করা যাবে না? আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের সামনে অবস্থান করে প্রমাণ করলাম আমরা শান্তিপ্রিয়। তবে আমাদের সাংবিধানিক অধিকারে বাধা দেয়া হয়েছে। এটা সবাই মনে রাখবেন। আর গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রামে আপনাদের এই ভূমিকা জাতি অবশ্যই স্মরণ করবে। এ সময় শিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, মানবাধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লেখক-শিল্পী-শিক্ষক-সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।