Ad0111

বাংলাদেশে অর্ডার বাতিলে ফুলে-ফেঁপে উঠছে পাকিস্তানের টেক্সটাইল

বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে ক্রয়াদেশ বাতিল করে পাকিস্তানের দিকে ঝুকে পড়ায় দেশটি তৈরি পোশাক রফতানির রেকর্ড গড়ছে।

বাংলাদেশে অর্ডার বাতিলে ফুলে-ফেঁপে উঠছে পাকিস্তানের টেক্সটাইল
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারিতে দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে রফতানি আদেশ স্থানান্তরিত হয়ে যাওয়ায় ফুলে-ফেঁপে উঠছে পাকিস্তানের টেক্সটাইল শিল্প। বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে ক্রয়াদেশ বাতিল করে পাকিস্তানের দিকে ঝুকে পড়ায় দেশটি তৈরি পোশাক রফতানির রেকর্ড গড়ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের ভঙ্গুর প্রায় অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব ফিরিয়ে আনছে দেশটির টেক্সটাইল খাত। মহামারিতে দক্ষিণ এশীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের আদেশ বাতিলের সুযোগে রফতানি রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে দেশটি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বাণিজ্য উপদেষ্টা আব্দুল রাজাক দাউদ বলেছেন, দেশটির রফতানি এক বছর আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রফতানির এই রেকর্ড দেশের দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলবে। তিনি বলেন, পরবর্তী আর্থিক বছরে রফতানির এই চিত্র বৃদ্ধি পেয়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে; যা দেশটির ২০২১ সালের মোট রফতানিকে ছাড়িয়ে যাবে। পাকিস্তানের মোট রফতানির প্রায় ৬০ শতাংশই টেক্সটাইল শিল্পের— মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের ডেনিম জিন্স থেকে তোয়ালে পর্যন্ত সবকিছুই রফতানি করে দেশটি। 

২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর ভারত এবং বাংলাদেশের আগে কারখানা খুলে দেয় পাকিস্তান। এর ফলে টার্গেট করপোরেশন এবং হ্যানসব্রান্ডের মতো বৈশ্বিক বিভিন্ন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানের ক্রয়াদেশ পায় পাকিস্তান। পাকিস্তানের এই বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, আসলে বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে প্রচুর পরিমাণ অর্ডার পাকিস্তানে স্থানান্তরিত হয়েছে। তিনি বলেন, আরেকটি ভালো দিক হচ্ছে আমরা এখন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছি। তিন-চার বছর আগেও রফতানিতে বাংলাদেশ আমাদের হারিয়ে দিয়েছিল।

এছাড়া পাকিস্তানের সরকার আগামী মাস থেকে আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা এবং মধ্য এশিয়ার বাজারে রফতানির জন্য প্রণোদনা ঘোষণার পরিকল্পনা করছেও বলে জানিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় ট্যাক্স বিরতি, সস্তা ঋণ ও বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে পাকিস্তান তার রফতানি বাড়াচ্ছে। ২০১৮ সাল থেকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার ৬০ শতাংশ পতনেও রফতানি বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।

দেশটির অন্যতম শীর্ষ ব্রোকারেজ কোম্পানি ইসমাইল ইকবাল সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহফাজ মুস্তফা বলেন,  গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের রফতানি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়ে উঠেছে। আঞ্চলিক দামের বিষয়টি মাথায় রেখে একটি নির্দিষ্ট জ্বালানি শুল্ক চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, রফতানিকারকদের পাওনা অর্থ অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে ফেরত দিচ্ছে সরকার। আর এতে স্থানীয় মুদ্রার বিশাল মূল্য হ্রাস হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি তাদের রফতানি বাড়াতে প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক ওঠা-নামা চক্র থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। এ জন্য দেশটি ১৯৮০’র দশকের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে অন্তত ১৩ বার সহায়তা চেয়েছে।

রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতির মাঝেও দেশটি অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা পূরণে ৬ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট প্রোগ্রাম পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। দেশটির রেকর্ড উচ্চ আমদানি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে পাকিস্তানের এই বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেছেন, এটি নিয়ে খুব বেশি কিছু করার নেই। চলতি বছর তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ মার্কিন ডলারে পৌঁছালে তা দেশের জন্য চাপ তৈরি করবে। তবে দেশীয় শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে খাদ্য-সম্পর্কিত আমদানির পরিমাণ কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দাউদ।

চুক্তি স্বাক্ষর এবং ট্রাকের অবাধ চলাচলের অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য জোরদার করার চেষ্টাও করছে পাকিস্তান। আব্দুল রাজাক দাউদ বলেছেন, চলমান আর্থিক বছরে দেশটির বাণিজ্যের পরিমাণ বেড়ে ১২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা আগের পুরো বছরে ছিল মাত্র ১৪ মিলিয়ন ডলার।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news