বিদেশি কূটনীতিকদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাজনীতির উপর

সরকারী দল ও বিরোধী দলগুলোর ওই কর্মসূচীকে বিদেশিরা সিরিয়াসলি নিয়েছেন।

বিদেশি কূটনীতিকদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাজনীতির উপর

প্রথম নিউজ, অনলাইন: বাংলাদেশের রাজনীতি শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ থাকছে কি-না? তা জানা-বোঝার আগাম চেষ্টায় রয়েছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। বিশেষ করে ২৮শে অক্টোবর কাছাকাছি ভেন্যুতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের বড় কর্মসূচীতে অনড় অবস্থানে উদ্বিগ্ন বিদেশি বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগীরা। এই ক’দিনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত যেক’জন বিদেশি কূটনীতিকের আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে সর্বত্রই জিজ্ঞাসা ছিল ওই দিনে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে।

সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, সরকারী দল ও বিরোধী দলগুলোর ওই কর্মসূচীকে বিদেশিরা সিরিয়াসলি নিয়েছেন। যে কোন আলোচনাতেই তারা বিষয়টি তুলছেন। সরকারের প্রতিনিধিরা যে যার মতো করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেছেন এবং ২৮ শে অক্টোবর নিয়ে বিদেশিদের অভয় দেয়ার চেষ্টা করেছেন। একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশে অতীতে যেসব সহিংসতা হয়েছে সে প্রসঙ্গ টেনে বিদেশিরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত। গত সপ্তাহে উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রসঙ্গ টেনে ঢাকাস্থ বৃটিশ হাই কমিশনার সারাহ কুক পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে প্রত্যাহার করে নেয়া পুলিশ স্কট ফেরৎ প্রদানসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনুরোধ করেন। সচিবের সঙ্গে সেই আলোচনায় তৎকালীন বৃটিশ দূত আনোয়ার চৌধুরীর ওপর সিলেটে গ্রেনেড হামলার প্রসঙ্গটিও এসেছিল। অবশ্য সরকারের তরফে বরাবরের মতো বৃটিশ দূতকে আনসার ব্যাটালিয়ানের নিরাপত্তা নেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। 

সেগুনবাগিচা বলছে, সরকারের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের কাছে কূটনীতিকদের সাম্প্রতিক সময়ের জিজ্ঞাসার জবাবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা, পুলিশের আইনী ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মুখোমুখি অবস্থানের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বিদেশিদের নিরাপত্তায় সরকারের বিদ্যমান উদ্যোগ এবং ম্যাকানিজমের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। সেই সঙ্গে যে কোন জরুরি প্রয়োজনে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। স্মরণ করা যায়, বুধবার রাতে দেশের এক ব্যবসায়ীর গুলশানের বাড়িতে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসসহ বিদেশি অনেক কূটনীতিক। অরাজনৈতিক ওই আয়োজনে সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা ছাড়াও গণমাধ্যমের সম্পাদক, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন ব্যাংক এবং বহুজাতিক কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছিলেন।

রাজনীতি সচেতন অতিথিতে ঠাসা ওই আয়োজনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মূখ্য আলোচ্য ছিল বহুল আলোচিত ২৮ শে অক্টোবর। তবে সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যসগ সম-সাময়িক বিষয়াদিও স্থান পেয়েছিল। তাতে অংশ নেয়া একজন অতিথি বলেন, ২৮ শে অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কি ঘটতে চলেছে? পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থাকা রাজনীতিবিদদের কাছে পেয়ে তা জানা-বোঝার চেষ্টা করেন বিদেশি কূটনীতিকরা। ২৮ অক্টোবর ঘিরে নাগরিকদের সতর্ক করলো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য

২৮ অক্টোবর ঘিরে নাগরিকদের সতর্ক করলো যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন: এদিকে ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মারমুখি কর্মসূচীকে ঘিরে নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য সতর্ক করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস ও বৃটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই সতর্কতা বার্তা দেওয়া হয়েছে। মার্কিন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকা এবং সারা বাংলাদেশের অন্যান্য শহরে রাজনৈতিক সমাবেশের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের কাছে এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের কাছে ভিআইপি রোডে। মার্কিন নাগরিকদের সতর্কতা গ্রহণ  এবং মনে রাখা উচিত যে, শান্তিপূর্ণ হওয়ার উদ্দেশ্যে বিক্ষোভগুলোতে সংঘর্ষে হতে পারে। আপনাকে বিক্ষোভ এড়াতে এবং কোনো বড় সমাবেশের আশপাশে সতর্কতা অবলম্বন করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। বৃটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথের ওয়েবসাইটে দেয়া বার্তায় আগামী ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমাবেশের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করা হয় এবং এক্ষেত্রে ব্রিটিশ নাগরিকদের ভ্রমণ সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানানো হয়।