বিএনপির সমাবেশে টার্গেট ১০ লাখ লোক
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কালকের সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের এক দফার পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার ঘোষণাও দেওয়া হবে।

প্রথম নিউজ, ঢাকা: আজ বুধবার (১২ জুলাই) দুপুর ২টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। এ সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ‘এক দফা’ ঘোষণা করবে দলটি। এই সমাবেশকে উপলক্ষ করে রাজধানীতে বড় ধরনের শো-ডাউন করে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায় বিএনপি। এজন্য গত কয়েকদিন দফায়-দফায় মিটিং করেছেন বিএনপির ঢাকা মহানগরীর নেতারা। সমাবেশে রাজধানীবাসীকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে টানা কয়েকদিন পাড়া-মহল্লায় মাইকিংও করা হয়েছে।
সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটানোর টার্গেট রয়েছে দলের, সেই লক্ষ্যের কথা ঢাকা ও সারা দেশের নেতাকর্মীদের জানানো হয়েছে। রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোকে নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে বিশেষ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, বিএনপির টার্গেট বর্তমানে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকদের সমাবেশের জনসমাগম দেখানো। এ কারণে নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে- যেভাবেই হোক জেলা ও মহানগর থেকে বেশি করে নেতাকর্মীদের এনে ঢাকায় জড়ো করতে হবে। সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম ঘটানোর টার্গেট রয়েছে দলের, সেই লক্ষ্যের কথা ঢাকা ও সারা দেশের নেতাকর্মীদের জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোকে নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শুধু তাই নয়, রাজধানীর বাইরে থেকে সমাবেশে অংশ নিতে যেসব নেতাকর্মী আগে ঢাকায় আসবে তাদের থাকা-খাওয়ার জন্য ঢাকার ব্যক্তি পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, বুধবারের সমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হবে। স্মরণকালের বড় জনসমাবেশ করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। এই সমাবেশ থেকে সরকারকে চূড়ান্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হবে। বিএনপি সমাবেশের লিখিত অনুমতি পেয়েছে কি না জানতে চাইলে সালাম বলেন, আমরা কালকে সমাবেশে করব, এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। ঢাকাবাসী এই সমাবেশে যোগ দেবেন। জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফার পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখাও দেওয়া হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগর বিএনপির শীর্ষ এক নেতা বলেন, কালকের সমাবেশে ১০ লাখ লোকের সমাগম করার প্রস্তুতি রয়েছে। সেই অনুযায়ী অন্যান্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সমাবেশে রাজধানীর পাশাপাশি গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জসহ আরও বেশি কিছু জেলার নেতাকর্মীদের অংশ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ নেতা আরও বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে যে, সফররত বিদেশি কূটনীতিকরা ঢাকায় অবস্থান করছেন। ফলে, সমাবেশে যত বেশি সম্ভব জনসমাগম করতে হবে। যেন সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন সরকারের পক্ষে বিশাল জনসমর্থন রয়েছে তা বোঝানো যায়।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কালকের সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের এক দফার পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফার ঘোষণাও দেওয়া হবে। পাশাপাশি যুগপৎ আন্দোলনের দ্বিতীয় ধাপে দুইদিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১৪ ও ১৫ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি দেওয়া হতে পারে। আর ২২ জুলাই পরের সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে। তবে, প্রথম পর্যায়ে অহিংস কর্মসূচি দেওয়া হবে। মঙ্গলবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে, সেখানে কর্মসূচি ঠিক হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, কালকের সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফার পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখাও দেওয়া হবে। সমাবেশ থেকে অবশ্যই রাজনৈতিক নতুন কর্মসূচি ঘোষণা হবে। তবে, রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি ঠিক করা হবে।