Ad0111

নেতাকর্মীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির নমূনা: রিজভী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য আওয়ামী লীগের ইভিএমের মতো

নেতাকর্মীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির নমূনা: রিজভী

প্রথম নিউজ, ঢাকা: তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য আওয়ামী লীগের ইভিএমের মতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রান্ধনীবাড়ী এলাকায় গতকাল বুধবার রাত পৌনে আটটায় যুবদল নেতা আকবর আলীকে গুলি করে হত্যা করেছে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা। আওয়ামী সন্ত্রাসী যথাক্রমে সেলিম ও মাসুদ নিজেদের অস্ত্র দিয়ে সরাসরি গুলি করে হত্যা করে যুবদল নেতা আকবর আলীকে। এই হত্যাকারীরা এলাকার আওয়ামী লীগের চিহ্নিত দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। আকবর আলী সয়েদাবাদ ইউনিয়ন যুবদলের প্রস্তাবিত কমিটির আহবায়ক। এই হত্যাকান্ডের সাথে স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী দলীয় ইউপি চেয়ারম্যানের প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে। এলাকার আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই হত্যাকান্ড পরিকল্পিত এবং ঠান্ডা মাথার খুন। নিজস্ব সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিরোধী দল তথা বিএনপি নেতাকর্মীকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির নমূনা। সারাদেশেই জনপদের পর জনপদে আওয়ামী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অস্ত্রসজ্জিত করা হয়েছে এবং উজ্জীবিত করা হয়েছে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতকে নিশ্চিহ্ন করতে। আর সেজন্যই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গ্রাম থেকে শহরে খুনের নেশায় ছুটে বেড়াচ্ছে। বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জীবন কেড়ে নেয়াই যেন এই মূহুর্তে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। একইভাবে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাড়াও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কেবলমাত্র সিরাজগঞ্জ জেলাতেই বিএনপি’র বেশ কিছু নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ারে নির্বিচারে হত্যা করেছে। খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা, বিএনপি’র সমাবেশে সশস্ত্র হামলা, গুলি করে বিএনপি নেত্রীর চোখ অন্ধ করে দেয়াসহ বিএনপি’র কার্যালয়ে উপর্যুপুরি হামলায় অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করে পঙ্গু করার ঘটনা ঘটছে অহরহ সিরাজগঞ্জে। সিরাজগঞ্জ এখন আর একটি রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছে।


তিনি বলেন, তথ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, বিএনপি নেতারা রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করছে। তথ্যমন্ত্রী যেন আওয়ামী লীগের ইভিএম এর ন্যায় ভূমিকা পালন করছে। যে প্রতীকেই বোতাম চাপ দেয়া হোক না কেন তা যেমন নৌকায় চলে যায়, ঠিক তেমনি সারাদেশে নিজেদের পাহাড়সম অপকর্মের দিকে না তাকিয়ে তা অনর্গল মিথ্যার বেস্যাতি করে যাচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী। দেশব্যাপী নিজেদের সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করছেন, এটা কোন উন্নয়নের কাজ ? সকলের কাছে দৃশ্যমান আপনাদের লোকেরাই সরাসরি যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যা করেছে। এটা কি আইন সম্মত কাজ ? বরং জনগণ এই রক্তাক্ত ঘটনাকে আওয়ামী আইনের শাসনের কাজ বলেই বিবেচনা করে। এখন পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার বিএনপি নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণী-পেশার মানুষ গুমের শিকার, সব মিলিয়ে প্রায় বিশ হাজার নেতাকর্মী আওয়ামী শাসনামলে হত্যার শিকার হয়েছেন। শাসকগোষ্ঠী এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছেন। এই অনাচার ও রক্তাক্ত সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা ? আওয়ামী নেতাদের কাছে অহং ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয়। তবে আপনার কথা যে নির্জলা মিথ্যাচার এটি সবাই জানে। আপনাদের হত্যা ও রক্তপাতের বিরুদ্ধে রাগ, ঘৃনা ও প্রতিবাদের আগ্নেয়গিরি হয়ে আছে এদেশের জনগণ।
সময় অত্যাসন্ন ভোট ডাকাতি, গুম-খুন-বিচার বহির্ভূত হত্যা, লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার, বিচার বিভাগকে ধ্বংস করা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো তছনছ করে দেয়ার সঠিক বিচার একদিন এদেশের মাটিতে হবেই। দুর্বৃত্তরা কখনোই পার পায় না।
সংবাদ সম্মেলনে রিজেভী বলেন, জাতীয়তাবাদী যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যার মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণিত হলো-সন্ত্রাসী দুঃশাসনের ছায়ায় গ্রাস হয়ে আছে বাংলাদেশ। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী সর্বনাশা আশকারা দিয়ে দেশব্যাপী যে ঘাতক কসাই দল গড়ে তুলেছে তাদের দ্বারাই নিহত হলো আকবর আলী। ক্ষমতাসীনদের বিশ^াসের একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করে ক্ষমতা ধরে রাখা। আওয়ামী লীগ ঐতিহ্যগতভাবেই গুম-খুনের ওপর নির্ভরশীল একটি দল। তাই সহিংস সন্ত্রাসের ব্যাপক বিস্তার তাদের জন্য অপরিহার্য। তবুও দৃঢ়কন্ঠে বলতে চাই-প্রতিবাদী স্বরকে কখনোই থামিয়ে দেয়া যাবে না। বিদায়ের শেষ সময়ে খুনোখুনিতে মেতে উঠে ও প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার করে নিজেদের রক্ষা করতে পারবে না বর্তমান সরকার। পেশীশক্তি ও জিহব্বার ধার দিয়ে আর জনগণকে পরাধীন রাখা যাবে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমি জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র পক্ষ থেকে যুবদল নেতা আকবর আলীকে হত্যাকারী আওয়ামী দুস্কৃতিকারি সেলিম ও মাসুদসহ জড়িতদের এই মূহুর্তে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করছি। আমি আকবর আলীর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোকাহত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, সহ সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news