সরকার পতনের মুখে প্রয়োজন একটা ধাক্কা: ড. শোশররফ
গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: জনগণ সঙ্গে নিয়ে একটা ধাক্কা দিলেই সরকারের পতন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে 'মানবাধিকার ইস্যু এবং বাংলাদেশ ভাবমূর্তি' উপলক্ষে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা মনে কি, আমরা বিশ্বাস করি- এদেশের জনগণকে সংগঠিত করে, বিএনপিসহ দেশের যারা দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক এবং জাতীয়তাবাদী সকল শক্তিকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
'আমি বিশ্বাস করি, সরকারে এতো থাকার পরে তার যে ভার, সেই ভারে কিন্তু আজকে সরকার পতনের মুখে। আর আন্তর্জাতিকভাবে তারা যে চাপে আছে, তাতেও পতনের মুখে। এখন জনগণকে নিয়ে একটা ধাক্কা দেয়া দরকার মাত্র। সেই ধাক্কাটা দেয়ার জন্য আসুন, জনগণকে নিয়ে আমরা সংগঠিত হই, একত্রিত হই ও শপথ গ্রহণ করি। এই সরকারের পতন এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠাতা, এছাড়া এদেশে আর কোন বিকল্প নাই।'
রোববার চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শেষ হয়েছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদি সরকার নির্বাচনকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এখানে ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনে তারা (আওয়ামী লীগ) যাকে নৌকার প্রার্থী করবে, সেই পাস করবে। এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এখানে নির্বাচন হচ্ছে না। সেই কারণে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই।
তিনি বলেন, তারপরও দেখেন, সেখানে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ কি পরিমাণ নির্বাচনে সন্ত্রাস হয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগেরও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছে, অন্যরাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আপনারা দেখেন, আওয়ামী লীগের নৌকার প্রতি মানুষের এতো বিতৃষ্ণা যে, কি পরিমাণ স্বতন্ত্র প্রার্থী পাস করেছে। সুতরাং এই নির্বাচনী ব্যবস্থা সরকার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। একটা স্থানীয় নির্বাচন, এখানেও কি পরিমাণ সন্ত্রাস হতে পারে, কি পরিমাণ মারামারি হতে পারে এবং কি পরিমান মৃত্যু হয়েছে- আপনারা তা দেখেছেন।
'অতত্রব, এই সরকারের অধিনে গণতন্ত্র আসবে না, এই সরকারের অধিনে কোন নির্বাচনী ব্যবস্থা আসবে না, এই সরকার থাকলে মানবাধিকার আর পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না, মানুষের সম্মান রক্ষা করা সম্ভব হবে না, নিরাপত্তা সম্ভব হবে না, এই সরকার থাকলে সত্যে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। তাই সামনে আমাদের একটা টার্গেট, সেটা হচ্ছে যে, জনগণের মুক্তি, গণতন্ত্র ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই সরকারকে আমাদের হটাতে হবে।'
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করেছে। আজকে সরকার সাময়িকভাবে তার কারা মওকুফ করে তাকে বাড়ি রাখার সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি আজকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা আন্দোলন করছি। সারাদেশের বুদ্ধিজীবীরা দাবি করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র দাবি ও আহ্বান করছে, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার জন্য সরকারের যে বাধা, সেই বাধাটা যেনো তুলে নেয়।
বাধাটা কি? সরকারে পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আইনের বিষয়। আমি মনে করি, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার পথে একমাত্র বাধা হচ্ছে সরকার। আইন নয়। কারণ ৪০১ ধারায় বেগম খালেদা জিয়া আজকে যে অবস্থানে আছেন, সেখানে লেখা আছে- সরকার ইচ্ছা করলে সাময়িক সাজা মওকুফ করতে পারে শর্তসহ অথবা শর্তহীন।'
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, আজকে বিএনপি চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের অবস্থা এমন যে, জনগণ ও আমাদের এতো দাবির পরেও একটি শর্ত উঠিয়ে দিতে পারে না। আইনের কথা বলছে। এখানে আইনের কিছু নেই।
আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: