ফের বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম

ব্যবসায়ীরা চান দাম বাড়ুক, আরও সরকারও তাতে সায় দিয়েছে

ফের বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাজারে প্রায় সব নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে যখন ভোক্তাদের নাভিশ্বাস, তখনই নতুন এক দুঃসংবাদ এল। সেটি হচ্ছে, ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা বাড়তে পারে। ব্যবসায়ীরা চান দাম বাড়ুক, আরও সরকারও তাতে সায় দিয়েছে।

রবিবার প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ৭ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে, তাই দেশীয় বাজারেও বাড়তে হবে, এ কথা বলেই তারা নতুন দাম প্রস্তাব করেছেন। 

অবশ্য কবে থেকে বাড়বে এবং লিটারে কত টাকা করে বাড়বে, তা নির্ভর করবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের অনুমোদনের পর।

রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য (আইআইটি) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের নেতৃত্বে ভোজ্যতেল ও চিনির মজুত পরিস্থিতি, আমদানি ও মূল্যনির্ধারণ নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তেল ও চিনির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। বৈঠকে দুই পণ্যেরই উৎপাদক ও পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা মূল্যবৃদ্ধির আবেদন করেছিলেন।

১৫ দিন পরপর বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেল ও চিনির সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন পাঠায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। এর ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি মূল্যনির্ধারণ করে। পরে পরিশোধনকারী সমিতিগুলোই তা ঘোষণা করে।

সফিকুজ্জামান বলেন, ‘৪ অক্টোবর ট্যারিফ কমিশন চিনি ও ভোজ্যতেলের ওপর প্রতিবেদন দিয়েছে। তখন পেঁয়াজের বাজার অস্থির ছিল। গত সপ্তাহে আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পেঁয়াজের বাজারটা মোটামুটি একটা পর্যায়ে নিয়ে আসতে পেরেছি।’

ভোজ্যতেলের পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান সফিকুজ্জামান। তবে ট্যারিফ কমিশন একাধিকবার বসে বিশ্লেষণ করে তা ১৬২ টাকা করার সুপারিশ করে।

এটা ছিল সেপ্টেম্বর মাসের গড় প্রতিবেদন। আজ দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করে প্রতি লিটার বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয়েছে ১৬০ টাকা, যার বর্তমান দাম ১৫৩ টাকা।

প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৩৬ টাকা, ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৭৬০ টাকা, আর পাম তেল প্রতি লিটার ১১৯ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

বর্তমানে যে দাম নির্ধারিত আছে, তা হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১২৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৭২৮ টাকা ও খোলা পাম তেল প্রতি লিটার ১১৬ টাকা।

সমিতির এই প্রস্তাব বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান অতিরিক্ত সচিব সফিকুজ্জামান। 

তিনি বলেন, বাণিজ্যসচিব পরে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির সঙ্গে কথা বলে এটি চূড়ান্ত করবেন। এরপর পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং তাদের সমিতিই নতুন দাম ঘোষণা করবে।

এদিকে চিনি পরিশোধনকারী সমিতি খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম বর্তমানের চেয়ে ১০ টাকার বেশি বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। 

তবে সফিকুজ্জামান বলেন, গত সপ্তাহে চিনির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (এসডি) ১০ শতাংশ কমানো হয়েছে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom