পুলিশ হেফাজতে ছাত্রদল নেতা হত্যার অভিযোগে মামলার আবেদন
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ২০১৮ সালে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেনকে থানা হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগে শাহবাগ ও রমনা থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। গতকাল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা নেয়ার আবেদন করেন নিহত জাকিরের চাচা বি এম অলিউল্লাহ। ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান মামলার আবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৭ই অক্টোবর দিন ধার্য করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আবেদনে শাহবাগ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (ওসি) আবুল হাসান, রমনা থানার তৎকালীন পরিদর্শক (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম, শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সুজন কুমার রায়, সাইদুর রহমান, অমল কৃষ্ণ ও শাহরিয়ার রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে বিলম্বে মামলা করার বিষয়ে বাদী অভিযোগ করেন, বিএনপি’র পক্ষ থেকে ও বাদীর পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে বাদীকে পুলিশ তিনদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখে জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। মামলা করলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়। আসামিরা দীর্ঘদিন বাদীকে ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানোর কারণে মামলা করতে পারেননি। মানসিকভাবে সাহস সঞ্চয় করে পরিবারের সঙ্গে পরামর্শে তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেন।
মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৬ মার্চ সকালে জাকির হোসেন ছাত্রদলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে রওনা হন। সেখানে মিছিল শেষে মৎস্য ভবনের সামনে আসেন জাকির। সেখান থেকে জাকির ও আক্তার হোসেন নামের আরেক ব্যক্তিকে ধরে রমনা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের সেখানে নির্যাতন করা হয়। পরে জাকির ও আক্তারকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আরেক দফা নির্যাতন করে পুলিশ। শাহবাগ থানার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৮ই মার্চ আদালতে তোলা হয়। পুলিশ হেফাজতে জখম অবস্থায় মিলনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়। সে সময় মিলন বাদীকে জানান, পুলিশ তাকে অমানুষিক নির্যাতন করেছেন। এরই মধ্যে পুলিশ তাকে ভ্যানে করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। ডিবি কার্যালয়, শাহবাগ ও রমনা মডেল থানায় খোঁজাখুঁজি করেও বাদী তার সন্ধান পাননি।
পরে জানতে পারেন মিলন শাহবাগ থানার হেফাজতেই আছে। বাদী আসামিদের শত অনুনয়-বিনয় করেও ভাতিজার সাক্ষাৎ পাননি। পরে ১১ই মার্চ মৃত প্রায় অবস্থায় মিলনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। কেরানীগঞ্জ কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে মিলনকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে সে মৃত্যুবরণ করেন। পরে একজন ফোন দিয়ে মিলনের মৃত্যুর খবর জানান বাদীকে। পরে ঢামেকে গিয়ে দেখতে পান মিলনের মরদেহ মর্গের সামনে পড়ে আছে। মিলনের শরীরে অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান তিনি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews