প্রধানমন্ত্রী জনগনকে নিয়ে নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন: মান্না
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে মানুষের জীবনের মতো তুচ্ছ আর কিছু নেই।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বেইলি রোডে অগ্নিকান্ড নিয়ে শেখ হাসিনা জনগণের সাথে নির্দয়-নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে।
শনিবার (২ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন আয়োজনে বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণে পূর্ণ ব্যর্থতা এবং ব্যাংক-অর্থনীতি ধ্বংসকারী ও অর্থ পাচারকারী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এক প্রতিবাদ তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে মানুষের জীবনের মতো তুচ্ছ আর কিছু নেই।
সভায় বেইলি রোডে অগ্নিকান্ডে প্রসঙ্গ তুলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বেইলি রোড নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, সেটি দেখে আমি খুব অবাক হয়েছি, ব্যথিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ওই ভবনে একটি অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র ছিল না। এই লোকগুলোকে এত করে বলেছি, তারা সচেতন হয়নি। মানে উনি বোঝাতে চেয়েছেন, এই যে দুর্ঘটনা হলো, দোষ সব মানুষের যারা মরেছে, যারা এখানে দোকান, রেস্টুরেন্ট, ব্যবসা করেছে। যেমন করে দেশে ও বাইরে গিয়ে বলেন এত সুন্দর ভোট ৭৫ এর পরে আর হয়নি। এখনো একইভাবে তিনি জনগণের সাথে নির্দয়-নিষ্ঠুর রসিকতা করছেন বলে আমার কাছে মনে হয়েছে। উনি বলছেন, ওরা কথা শুনেনি, মানেনি, তাই মরেছে। কথার মানে কি তাই দাঁড়ায় না? এই ঘটনায় কি কোনো মামলা হতে পারে? আমি পত্রিকায় বিবৃতি দেখলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ ও সমাজ নিয়ে যারা ভাবেন তারা বলেছেন, এটা একটি হত্যাকান্ড। এটা নিমতলীর সময় বলা হয়েছিল, এফ আর টাওয়ারের সময় বলা হয়েছিল। আমাদের দেশে মানুষের জীবনের মতো তুচ্ছ আর কিছু নেই অন্তত সরকারের কাছে।
মান্না বলেন, এই সরকার একটিই কাজ পারে জুলুম, নির্যাতন, ফোর টুয়েন্টি, ঠকবাজী করে ভোটকে নিজের পক্ষে দেখাতে। অথচ জিনিসের দাম বাড়ছে একের পর এক, মানুষের জান বেরিয়ে যায়। ওনারা কোনো জিনিসের দাম কমাতে পারেননি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মনুশি (সাবেক) অসহায় সিন্ডিকেটের গায়ে হাত দিতে পারছেন না। প্রধানমন্ত্রী জানছেন, কিন্তু মনে রাখতে পারছেন না। দুনিয়ার সমস্ত লুটেরা, ব্যাংক ডাকাত, ভোট ডাকাতদের সরকার মদদ ও প্রশ্রয় দেয়। তাতে জিনিসপত্রের দাম কমবে কি করে?
সরকারের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, এরা শুধু ভোট ডাকাত বা চোর না, এরা ব্যাংক লুটেরা, জনগণের ওপর নির্যাতনকারী। এরা মানুষের মৃত্যুর ওপর দাঁড়িযে খাঁ খাঁ করে হাঁসতে পারে, রসিকতা করতে পারে। এই সরকারের মানবিকতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, মানুষের প্রতি কোনো ভালোবাসা নেই, দেশের জন্য উন্নয়নের কোনো ভালো চিন্তা নেই। দেশটি ডুবতে বসেছে। ডলার নেই, টাকা নেই, ব্যাংক শূন্য, শেয়ার বাজার ধ্বংস। কোনো কিছু তারা ঠিক করতে পারে না।
রাজপথের বিজয়, জনগণের বিজয় বোঝার মতো ক্ষমতা আওয়ামী লীগ হারিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, একদিন এই পরিস্থিতি বদলাবে। সেই বদলানোর জন্যই আমরা কাজ করছি। সেই দিন সমাগত। আসছে সামনে মানুষ নিজেরা বাঁচার তাগিদে ভোট, ভাত ও গণতন্ত্রের দাবিতে রাজপথে নামবে। সেই লড়াই হবে চূড়ান্ত।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জি. মোফাজ্জল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাড. সৈয়দ এহসানুল হুদা। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এ জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিন নসু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ, আলমগীর হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম, তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকি, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।