প্রকৌশলীকে মেরে মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগ সেতুমন্ত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে
মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মন্ত্রীর বাড়ির সামনের একটি ঘরে আটকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
প্রথম নিউজ, নোয়াখালী: নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে পিডিবি’র অবৈধ লাইন নির্মাণে বাধা দেয়ায় উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামকে বেধড়ক মারধর ও মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগ উঠেছে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাত হোসেনসহ যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে মন্ত্রীর বাড়ির সামনের একটি ঘরে আটকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই উপ-সহকারী প্রকৌশলী।
প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, বাপেক্সের একটি উন্নয়ন প্রকল্পের বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের উদ্দেশ্যে ফেনী থেকে বিউবোর ঠিকাদারের লোকজন কোম্পানীগঞ্জে আসেন। তারা তাদের নির্ধারিত কাজ না করে বসুরহাট পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি অবৈধ লাইন নির্মাণ শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে পিডিবি’র (বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড) বসুরহাট কার্যালয়ের আবাসিক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম তাকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তিনি গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। বিকাল ৪টার দিকে পুনরায় অবৈধ লাইন নির্মাণকালে তিনি গিয়ে বাধা দিলে যুবলীগ নেতা মো. খোকন ও শিপন শাহরিয়ারসহ তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করেন। পরে সেখান থেকে তাকে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই শাহদাতের কাছে নিয়ে যান। সেখানে একটি ঘরের ভেতর আটকে শাহদাতসহ দ্বিতীয় দফায় তাকে মারধর করা হয়। তারা এ সময় তার মাথার চুল কেটে দেন। এরপর ছবিগুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন যুবলীগ নেতা খোকন।
খবর পেয়ে ফেনী থেকে পিডিবির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করেন। বর্তমানে তিনি কুমিল্লার বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে নির্যাতনের শিকার প্রকৌশলী আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন বলেও জানান। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই মো. শাহদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার সঙ্গে কিছু হয়নি। দুইটি খুঁটি স্থাপনে এক লাখ টাকা দাবি করায় লোকজন ধরে থাপ্পড় দিয়েছে। লোকজন তাকে মেরেছে, তখন আমিও কয়েকটি দিয়েছি।’ এ সময় তার চুল কেটে দেয়া হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন।
বসুরহাট পৌরসভা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি শিপন শাহরিয়ার দাবি করেন, তিনি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের ওপর হামলা করেননি। তবে তিনি ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বানু মাঝির বাড়িতে খুঁটি স্থাপন করতে গিয়ে এক লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তিনি মন্ত্রীর ছোট ভাইয়ের সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করেন। তখন ওই এলাকার নারীরা তাকে ঘিরে ধরে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছে। মন্ত্রীর ভাই তাকে রক্ষা করেছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাদেকুর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনেছেন। তবে ঘটনাটি ঠিক কোথায় ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে কোম্পানীগঞ্জ পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।