প্যানেল ছাড়াই হবে বিসিবি’র নির্বাচন

প্যানেল ছাড়াই হবে বিসিবি’র নির্বাচন

প্রথম নিউজ, ডেস্ক: ১২তম বোর্ড সভার মাধ্যমে গতকাল ভেঙে দেয়া হলো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সবশেষ নির্বাচিত কমিটি। যদিও আনুষ্ঠানিতভাবে এই পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩১শে অক্টোবর। এরই মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেল বিসিবি’র নতুন নির্বাচনের কার্যক্রম। গতকাল সভাপতি হিসেবে নিজের শেষ বক্তব্য দিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। জানিয়েছেন আসন্ন নির্বাচনে থাকবে না তার কোনো প্যানেল। যে কেউ চাইলে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবারের নির্বাচনে। এমনি কেউ যদি বোর্ড সভাপতি হতে চান তাতেও কোনো বাধা থাকবে না বিসিবি’র দুই যুগের নির্বাচিত সভাপতি নাজমুল হাসানের। আবারো তিনি সভাপতি হবেন কিনা সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনটা একেবারেই ভিন্ন।
আমি সব সময় মনে করি নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন পরিকল্পনা যদি না থাকে তাহলে ভিন্ন কিছু হয় না। আমার মনে হয় এবার নতুন মুখ আসা উচিত। তাই আমি নিশ্চিত করে বলে দিচ্ছি এবার আমার কোন প্যানেল নাই। তাই যে চাইবে যেখান থেকে খুশি পরিচালক হিসেবে নির্বাচত হয়ে আসবে। কারণ আমি অন্তত চাই এবার নির্বাচনটা হোক। সেখানে যদি আমি পরিচালক হিসেবে জিতে আসি তখন যদি কেউ আমাকে বলে তখন আমার প্রথম আবেদন থাকবে যে আমি প্রেসিডেন্ট হতে চাই না এখন। এরপর কি হবে সেটা পরের ব্যাপার। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি জানি না যে, এবার বোর্ড কি হবে। কারণ প্রত্যেক বার দেখেন একটা প্যানেল থাকে। তখন কেউ দেখা যায় নির্বাচনে দাঁড়ায় না। এবার তো আমার কোনো প্যানেলই নেই। আমি আশা করবো এবার নির্বাচনটা হোক।’ তবে বলার অপেক্ষা রাখে না শেষ পর্যন্ত পাপনই হচ্ছেন তৃতীয়বারের মতো সভাপতি।
বিসিবি’র গঠনতন্ত্র অনুসারে ক্যাটাগরি-১, জেলা, বিভাগ, ক্যাটাগারি-২ ক্লাব, ক্যাটাগরি-৩ জাতীয় দলের অধিনায়ক, সাবেক ক্রিকেটার ও সার্ভিসেস সহ মোট ১৭৪ জন কাউন্সিলর ২৩ জন পরিচালককে নির্বাচিত করবে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড ও উত্তরা ক্লাব থেকে কোনো কাউন্সিলর না দেয়াতে সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১৭১ জনে। এছাড়াও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ৫ জন কাউন্সিলর থেকে পরিচালক হিসেবে মনোনীত হয়ে আসবেন দুইজন পরিচালক। এরই মধ্যে বিসিবি নির্বাচন কমিশনের হাতে পৌঁছে দিয়েছে। এরপরই নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করবেন তফসিল। এ বিষয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নির্বাচনে ১৭১ জন ভোটার বা কাউন্সিলরের নাম এসেছে। এর মধ্যে অনেকেই আছেন নতুন যাদের অনেককে আমরা চিনি। সত্যি কথা বলতে চেনার কথা না কারণ তারা ভিন্ন জায়গা থেকে এসেছেন। আমরা তালিকাটা নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্থান্তর করে দিয়েছি। আমাদের নির্বাচন কমিশন আজ (গতকাল) দ্বিতীয় সভাতে বসে নির্বাচনের সবকিছু চূড়ান্ত করে তফসিল ঘোষণা করবেন।’
তিন ক্যাটাগরি ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সহ সব মিলিয়ে ২৫ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন বোর্ডের সভাপতি। তাই সেখানে যদি পরিচালক হিসেবে নাজমুল হাসান পাপন থাকেন তাহলে সেখানে নতুন কাউকে সভাপতি হিসেবে দেখার কোনো সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘আমি যতটা জানি এই জায়গাটাতে আমি মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত সভাপতি পদটা কেউ নিতে চাইবে না। আমি মনে করি এটা ভুল বিষয়। আমি মনেপ্রাণে যা চাই যে, এখানে নতুন কেউ এসে সভাপতি হওয়ার চ্যালেঞ্জ নিক। কারণ কারো জন্য কিছু আটকে থাকে না। আর আমি নতুন নতুন পাইপলাইন চাই যে এসে নেতৃত্ব নিক। এটার জন্যই আমি চাচ্ছি নেতৃত্বের জন্ম হোক আর বাংলাদেশের নেতার অভাব নাই।’
তবে বোর্ডের সাবেক পরিচালকদের দাবি যে বোর্ডই আসুকনা কেন নাজমুল হাসান পাপনই হচ্ছেন সভাপতি। তার এমন উন্মুক্ত করে দেয়ার কারণটাও বেশ বড়। গেল দুই মেয়াদে বোর্ডে সফল কর্মকা-ের পরও তাকে নিয়ে দেশের মানুষের আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। আর সেই কারণেই নিজেকে সরিয়ে নেয়ার এমন নাটকীয় বক্তব্য দিচ্ছেন নাজমুল হাসান।