নিষেধাজ্ঞার আগের দিন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সমুদ্রে ও নদীতে  ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিপণন বন্ধ থাকবে। সেই হিসেবে আজ ইলিশ বিক্রি ও ক্রয়ের শেষ দিন। কিন্তু শেষ দিনে মাছ কিনতে এসে অনেকটা হতাশা নিয়ে ফিরেছেন ক্রেতারা। 

নিষেধাজ্ঞার আগের দিন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

প্রথম নিউজ, বাগেরহাট: মা ইলিশ রক্ষায় বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে সাগরে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হতে যাচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে সমুদ্রে ও নদীতে  ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিপণন বন্ধ থাকবে। সেই হিসেবে আজ ইলিশ বিক্রি ও ক্রয়ের শেষ দিন। কিন্তু শেষ দিনে মাছ কিনতে এসে অনেকটা হতাশা নিয়ে ফিরেছেন ক্রেতারা। 

দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র বাগেরহাটের কেবি মাছ বাজারে দীর্ঘক্ষণ ঘুরেও দাম নাগালের বাইরে থাকায় মাছ না কিনেই ফিরতে হয়েছে বেশিরভাগ মানুষকে। 

আজ বৃহস্পতিবার ভোরের আলো ফোটার আগ থেকেই ইলিশ ক্রয়-বিক্রয় শুরু হয় কেবি বাজারে। ফজরের নামাজ শেষে মুহূর্তের মধ্যে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে ওঠে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম এই মৎস্য আড়ত। অন্যান্য সময়ের চেয়ে আজ খুচরা ক্রেতাদের যেমন ভিড় ছিল, তেমনি মাছের দাম ছিল অনেক বেশি। প্রতি কেজি মাছ অন্যান্য দিনের তুলনায় ১০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি বিক্রি হয়েছে। 

এক কেজি থেকে ১২০০ গ্রাম মাছ ১৫০০-১৬০০ টাকা কেজি, ৮০০-৯০০ গ্রামের দাম ১২০০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ৯০০ টাকা, ৩০০-৫০০ গ্রামের ইলিশ কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৬০০-৮০০ টাকা। সর্বশেষ ২০০ গ্রামের নিচের মাছ বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা কেজিতে। যা অন্যান্য সময় বিক্রি হত ২০০-৩০০ টাকা কেজি। শুধু ইলিশ নয়, অন্যান্য মাছের দামও ছিল সাধারণ ক্রেতাদের বাজেটের থেকে বেশি। ঢেলা, চেলা, চাপিলা, তুলার ডাটি, রুপচাঁদা, কঙ্কন, মেদ, মোচন গাগড়া, সাগরের বাইলা, লইট্টাসহ সব ধরনের মাছ বিক্রি হয়েছে বেশি দামে। সাগরে কাঙিক্ষত মাছ না পাওয়া, ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় মাছের পরিমাণ কম হওয়ায় বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।

ট্রলার মালিক নজরুল ইসলাম বলেন, কাল থেকে সাগরে অবরোধ শুরু। এবার তেমন মাছও পাইনি। যা পাইছি, তা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বেশি দামে বিক্রির পরও ঠিকঠাক খরচ উঠবে কিনা বলা যাচ্ছে না। সাগর থেকে ফেরা জেলে রফিকুল আমানি বলেন, সাগরে যাওয়ার পর থেকে কয়েকবার ঝড়ের কবলে পড়ে জাল ফেলতে পারিনি। তারপরও যে কয়বার ফেলেছি তেমন মাছ পাইনি। কাল থেকে আবার ২২ দিনের অবরোধ।

মাছ ক্রেতা মাসুদ মোল্লা বলেন, কাল থেকে ইলিশ বিক্রি বন্ধ হওয়ার কারণে ভোরেই মাছ কিনতে এসেছি। ভেবেছিলাম দাম কম হবে। কিন্তু খুচরা বাজারের থেকেও দাম বেশি। সিরাজুল ইসলাম নামে এক পাইকারি ক্রেতা বলেন, সপ্তাহে দুই-তিন দিন এখান থেকে মাছ কিনে কচুয়া, বাধাল, সাইনবোর্ডসহ বিভিন্ন স্থানে খুচরা বিক্রি করি। আজকে যে দামে মাছ কিনলাম তাতে খুচরা বাজারে বেচতে কষ্ট হয়ে যাবে।

আব্দুর রশীদ নামে এক ক্রেতা বলেন, কেবি বাজারে আগেও বেশ কয়েকবার মাছ কিনেছি। তখন দেখতাম পণ হিসেবে মাছ বিক্রি হতো, আজকে হচ্ছে কেজি হিসেবে। তাও দাম অনেক বেশি। ৬ কেজি মাছ কিনেছি ৫ হাজার টাকায়। কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী বলেন, অবরোধ শুরু হওয়ার কারণে সবাই চাচ্ছে মাছ কিনে রাখতে। চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া সমুদ্রে মাছ কম পাওয়ার কারণেও দাম কিছুটা বেশি।  বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় ৭ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত সমুদ্র ও নদীতে  ইলিশ আহরণ, পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ থাকবে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলেদেরকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom