নিষেধাজ্ঞা-ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নাই: প্রধানমন্ত্রী
শনিবার বিকালে আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নাই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অনেকে নাকি গণতন্ত্র চোখে দেখে না, গণতন্ত্র উদ্ধার করবে। যাদের জন্মই হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, উচ্চ আদালত যাদের ক্ষমতা গ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করেছে তারা কী গণতন্ত্র দেবে? আন্দোলনের নামে অনেক সময় অনেক কথা বলে। মাঝে মাঝে অনেকে একটু ঘাবড়ে যান। তারপর আবার নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি আসে। আমার স্পষ্ট কথা- এ মাটি আমাদের, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি জাতির পিতার নেতৃত্বে। এ সমস্ত ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বাংলাদেশের মানুষ জানে অধিকার আদায় করতে। শনিবার বিকালে আগারগাঁও পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সুধী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সেতু সচিব মো. মনজুর হোসেন প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশতো ছয় ঋতুর দেশ। কখনো বর্ষা, ঝড়, জলোচ্ছাস, রৌদ্রোজ্জ্বল আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কিছু দেখে আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। তাই আজকে যারা আন্দোলনের নামে রোজ আমাদের ক্ষমতা থেকে ফেলে দিতে চান তাদের এবং এখানে যারা উপস্থিত সকলের উদ্দেশে কবির ভাষায় বলতে চাই ‘মেঘ দেখে কেউ করিস নে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে; হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে’। ভয়কে জয় করে বাংলাদেশের জনগণ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাবে। নৌকা সারাজীবন উজান ঠেলেই এগিয়েছে। উজান ঠেলেই এগিয়ে যাবে। তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশের এত উন্নয়ন কেন হয়েছে? দেশে একটা গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রয়েছে বলেই সেটা হয়েছে। এ সময় সরকারপ্রধান বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নতি হবে। মানুষের কর্মঘণ্টা নষ্ট হবে না। বিশেষ করে এয়ারপোর্ট, কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, ফার্মগেট, মগবাজার ও কমলাপুর এলাকার যানজট নিরসন করবে। শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীর সঙ্গে সারা বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের একটি নতুন উপহার আজকে আপনাদের জন্য দিয়ে যাচ্ছি। যেটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক।
আজ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাওলার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের উদ্বোধন করা হয়েছে। আপনাদের জন্য এই উপহার দিচ্ছি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার জন্য এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যেটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে হয়েছে। আমরা চাচ্ছি আমাদের দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। আমরা শুধু যোগাযোগে উন্নত করি তা না। সার্বিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দ্রারিদ্রের হার ৪১ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। কোভিড না হলে আরও কমিয়ে আনতে পারতাম। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ’৯৬ সালের জুন মাস পর্যন্ত যারা ক্ষমতায় ছিল তারা দেশকে কিছুই দিতে পারেনি। নিজেদের আখের গুছিয়েছে। এদেশের মানুষের জন্য অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার সুযোগ তারা দিতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য তারা গড়তে চায়নি।
স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মমর্যাদা নিয়ে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াবে বাংলাদেশ, এটা কখনো তারা চায়নি। তিনি আরও বলেন, ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসি আমরা, এরপর জনগণের সেবা করতে শুরু করি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করব সেই কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলাম মাত্র পাঁচ বছর। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, রাস্তাঘাট, সবকিছু আমরা উন্নত করেছিলাম। এরপর আবার চক্রান্ত, ২০০১ থেকে ২০০৮। ২৯টা বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, কী দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে তারা। কিছু দিতে পারেনি। তারা শুধু নিজেরা লুট করেছে, আখের গুছিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলবো। আমাদের সরকার স্মার্ট সরকার হবে, জনগণ স্মার্ট জনগণ হবে, প্রশাসন স্মার্ট প্রশাসন হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে। আত্ম বিশ্বাস নিয়ে কাজ করলে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যায়। সেটি আমরা করে দেখিয়েছি।