Ad0111

নামে সেইফ হাউজ, চলে নির্যাতন

রাজধানীতে এমন ৯টি সেইফ হাউজের সন্ধান পেয়েছে র‍্যাব

নামে সেইফ হাউজ, চলে নির্যাতন
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ঢাকা: পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে যেমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন ভিকটিম নারী-পুরুষ, তেমনি সর্বস্বান্ত হচ্ছে তাদের পরিবারটিও। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাচারের জন্য রাজধানীতে নিয়ে আসা হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষদের। বিদেশে পাঠানোর আগে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ‘সেইফ হাউজে’। সেখানেই চলে নির্যাতন। এমন কয়েকটি সেইফ হাউজের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রাজধানীতে এমন ৯টি সেইফ হাউজের সন্ধান পেয়েছে র‍্যাব। সেইফ হাউজগুলো ছিল উত্তরা, খিলক্ষেত, পল্লবী, দক্ষিণখান, দারুসসালাম, রমনা, মতিঝিল, সদরঘাট ও তেজগাঁওয়ে। এখানকার বাসাগুলোতে আটকে রাখা হতো বিদেশগামীদের। এখানে আসার পর কেউ বিদেশ যেতে অপারগতা প্রকাশ করলে তার ওপর চালানো হতো নির্যাতন। আর পাচারকারীদের ফাঁদে পা দেওয়া নারীরাই এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বেশি।

উত্তরা, তেজগাঁও ও পল্লবীর সেইফ হাউজ থেকে ২৩ জন নারীকে উদ্ধারের পর অন্য সেইফ হাউজগুলোর সন্ধান পায় র‍্যাব। র‌্যাব জানতে পারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে কিছুদিন পর পর পাচারকারীরা সেইফ হাউজ বদলে ফেলে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সেইফ হাউজগুলো ভাড়া করা হচ্ছে মানবপাচার সিন্ডিকেটের পরিচিত কারও না কারও মাধ্যমে। এভাবেই গড়ে ওঠে সেইফ হাউজের নেটওয়ার্ক। আগতদের একটি রুমে রাখা হয় গাদাগাদি করে। তাদের বলা হয়, বিদেশ যাওয়ার জন্য কিছু কাজ বাকি। এ জন্য কয়েকদিন এখানে রাখা হবে।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, বাসা ভাড়া করতেও এসব সিন্ডিকেট ব্যবহার করে নারীদের। এমন কয়েকজন নারীকেও চিহ্নিত করা হয়েছে।

র‍্যাব বলছে, মানবপাচারের একটি চক্র নিজেদের দল ভারী করতে ও পাচারের ভিকটিম বানাতে গ্রামের নারীদের টার্গেট করছে বেশি। বিশেষ করে অস্বচ্ছল, বিধবা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষিরা তাদের নজরে থাকে। ‘বিদেশ যেতে টাকা লাগবে না’, ‘মোটা অঙ্কের চাকরি’ এসব প্রলোভন দেখানো হয় তাদের।

এরপর বিদেশ যাওয়ার বিভিন্ন প্রক্রিয়ার খরচ দালালচক্রই বহন করে। পাসপোর্ট, মেডিক্যাল, বিএমইটি কার্ড করে দিতেও সিন্ডিকেটের সদস্যরা সক্রিয়। এসব করার সময়ই বিদেশগামী নারীদের আটকে রাখা হয় সেইফ হাউজগুলোতে।

জানা গেছে, বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা কিছু ব্যক্তির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে বাংলাদেশের কিছু অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের। ওই ব্যক্তিদের চাহিদানুযায়ীই পাচারের জন্য গ্রামের নারীদের টার্গেট করা হয়। এ কাজে একেকজনের পাসপোর্ট, ভিসা, মেডিক্যাল, বিটিএমআই কার্ড বাবদ প্রাথমিক খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। যা ওই চক্রই বহন করে।

সেইফ হাউজে রাখার পর কোনও নারী যদি বিদেশে যেতে না চায় বা চাহিদামতো কাজে রাজি না হয় তখন নেমে আসে নির্যাতনের খড়গ। দেওয়া হয় ইলেকট্রিক শকও। অপারগতা প্রকাশ করা সেই নারীকে বলা হয়, বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়ায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিদেশ না গেলে সেটা ফেরত দিতে হবে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মইন বলেন, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ সব সেইফ হাউজগুলোতে অভিযান পরিচালনা করলে পাচারচক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে। সেইসঙ্গে পাচারের হাত থেকে অনেককে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news