‘ধর্ষণের কথা বলে দেবে শুনেই আফরাকে গলাটিপে হত্যা করে’
শিশুটি ঘটনা তার মাকে বলে দেবে জানালে আফরার গলা চেপে ধরে দেয়ালের সঙ্গে কপালে ধাক্কা দিয়ে রক্তাক্ত করে ও চোখে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
প্রথম নিউজ, ফেনী: ‘শিশু আফরা শনিবার (২৫ জুন) ১১টার দিকে স্কুলের ক্লাস থেকে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য বের হয়। তখন স্বপন তাকে দেখে মুখ চেপে ধরে কোলে করে পুকুরপাড়ে গাছের নিচে নিয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটি ঘটনা তার মাকে বলে দেবে জানালে আফরার গলা চেপে ধরে দেয়ালের সঙ্গে কপালে ধাক্কা দিয়ে রক্তাক্ত করে ও চোখে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গাছের মোটা লতাগুল্ম দিয়ে গলায় শক্ত করে পেঁচিয়ে পালিয়ে যায় আসামি স্বপন।’ রোববার সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এমন তথ্য জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে শিশু আফরাকে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি আনোয়ার হোসেন স্বপন (৩৫)। জবানবন্দি শেষে রাতে তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করে বিচারক।
এর আগে শনিবার রাতে সন্দেহভাজন আসামি আনোয়ার হোসেন স্বপকে ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার আনোয়ার হোসেন স্বপন ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের কবির আহমেদের ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা আরও জানান, পর্নো আসক্তি থেকে শিশু আফরাকে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে স্বপন। তার মোবাইল চেক করে প্রচুর পরিমাণ পর্নো ভিডিও পেয়েছে পুলিশ। স্বপন নিয়মিত পর্নো দেখতো বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, ঘটনার পর স্বপন নিজেই হত্যার বিচার চেয়ে ঘটনাস্থলের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের সাথে কথা বলেন। একপর্যায়ে স্থানীদের লোকমুখে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার আগে ও পরে স্বপন স্কুল আঙ্গিনায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। পরে পুলিশ তাঁকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে। ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. ইকবাল হোসেন জানান, ময়নাতদন্তে শিশুর গোপনাঙ্গে যেভাবে ক্ষতবিক্ষতের চিহ্ন রয়েছে, কোনো সুস্থ্য মানুষের পক্ষে এমনটা করা সম্ভব না।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা, সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী-দাগনভূঞা সার্কেল) মোহাম্মদ মাশকুর রহমান, দাগনভূঞা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাসান ইমাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক গোলাম জিলানী, জেলা বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআইও-২) ও মিডিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।এর আগে শনিবার সকালে নেয়াজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী মিফতাহুল মালিহা আফরা (৬) ক্লাস চলা অবস্থায় শৌচাগারে গিয়ে নিখোঁজ হয়। দুপুরে তার মরদেহ স্কুল সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের সময় স্কুলের পোশাকে ছিল আফরা। মরদেহের পাশে পড়ে ছিলো শিশুর পেন্ট। নিহত মিফতাহুল মালিহা আফরা জেলার দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের নেয়াজপুর গ্রামের বক্সআলী ভূঞা বাড়ির ওসমান গনির মেয়ে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews