ধর্মঘট নিয়ে কথা বলতে চান না পরিবহন শ্রমিকরা

দিন এনে দিন খাওয়া এসব শ্রমিকদের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও তারা ধর্মঘট নিয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ।

ধর্মঘট নিয়ে কথা বলতে চান না পরিবহন শ্রমিকরা

প্রথম নিউজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় চলছে পরিবহন ধর্মঘট। ফলে অলস সময় পার করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাস শ্রমিকরা। দিন এনে দিন খাওয়া এসব শ্রমিকদের পরিবার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও তারা ধর্মঘট নিয়ে কোনো কথা বলতে নারাজ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, এক দল পরিবহন শ্রমিক ক্যারাম খেলে সময় পার করছেন। শরিফুল ইসলাম নামে এক বাসচালক বলেন, ধর্মঘট নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না। কারণ আমরা কর্মচারী। মালিকের গাড়ি চালিয়ে সংসার চলে। আপনাদের কী বলতে কী বলব, তখন মালিক পক্ষ মন খারাপ করবে। কারণ সবকিছুর আগে আমাদের সংসার চালানোর কথা ভাবতে হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের বাসের এক হেলপার বলেন, সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদ এই ধর্মঘট ডেকেছে। অথচ দাবি আদায়ের চেয়ে আমাদের মতো দিনমজুরদের সংসার চালানোর কথা ভাবতে হয় আগে।

রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের বাসচালক কালাম (ছদ্মনাম) বলেন, কার গণসমাবেশ? কখন সমাবেশ? এসব নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ওসব নিয়ে আমাদের কথা বলাও বেমানান। আমরা শুধু মালিকের অর্ডার ফলো করি। তবে আশা করি, খুব কম সময়ের মধ্যে ধর্মঘট ওঠে যাবে। কারণ এভাবে ধর্মঘট চলতে থাকলে সংসার চালানো মুশকিল হয়ে যাবে। এই দুঃসময়ে মালিক সমিতি আমাদের পাশে না দাঁড়ালে পথে বসতে হবে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. হামিদুর রহমান নান্নু মুঠোফোনে  বলেন, দাবি আদায়ে সরকারের সঙ্গে বার বার আলোচনা হলেও কোনো সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিতে হয়েছে। এতে মালিক-শ্রমিক দুই পক্ষেরই স্বার্থ জড়িত। তাই দুই পক্ষই এই ধর্মঘটে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের আপদ-বিপদের সময়ে মালিক সমিতি তাদের পাশে থাকে। চলমান ধর্মঘটেও কোনো শ্রমিক যদি অভাবে পড়ে বা সহায়তার প্রয়োজন হয়, তাহলে আমরা তার পাশে দাঁড়াব। এ নিয়ে ধর্মঘট ডাকার আগেই সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক পরিষদে আলোচনা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছি। 

প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আন্তঃজেলা ও দেশের বিভিন্ন রুটে গড়ে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক বাস চলাচল করে। গত ২৬ নভেম্বর মহাসড়কে নসিমন ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধ, ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন সংশোধন ও পুলিশি হয়রানি বন্ধসহ ১০ দফা দাবি পূরণে সরকারকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ১৭টি সংগঠন। তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ে দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ধর্মঘটে যায় সংগঠনগুলো।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom