দিরাইয়ে মসজিদের ক্যাশিয়ার পদ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

শনিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার খেজাউড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া ও শিহাব উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

দিরাইয়ে মসজিদের ক্যাশিয়ার পদ নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৩০

প্রথম নিউজ, সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে গুরুতর আহত ৪ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার খেজাউড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া ও শিহাব উদ্দিনের লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। দুই ঘন্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে এক পক্ষ অপরপক্ষের বসতবাড়িতে হামলা ও ভাংচুর করে। খবর পেয়ে দিরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের মধ্যে আনোয়ার মিয়ার পক্ষের লোকমান মিয়া, ফয়সল, জামান মিয়া, জিহাদ মিয়া, সজীব মিয়া এবং অপর পক্ষের শিহাব উদ্দিন, জয়নাল আবেদিন, সামছুল ইসলাম, রায়হান মিয়া ও শাহিন মিয়াকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। অন্য আহতরা হলেন- ময়না মিয়া, সুমন মিয়া, রাকিব আলী, আল আমিন, সজ্জাদ নুর, কামাল উদ্দিন, আব্দুল হক, আব্দুল হামিদ, সুহেল, জম্মত আলী, জাকিরুল ইসলাম, আলী আহমদ, আতার মিয়া, আমিনুল হক, সোহাগ মিয়া, আরশাদুল মিয়া, সাজুল ইসলাম, ছল মিয়া, তজবুল মিয়া, রাজ মিয়া।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধ ছিল। সম্প্রতি খেজাউড়া জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। শিহাব উদ্দিনের পক্ষ আনোয়ার মিয়ার লোকজনকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করে। গত শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিকন্ডা হয়। দুই পক্ষ সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিলেও মুষলধারে বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। শনিবার দুপুরের দিকে বৃষ্টি থামলে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাড়িতে হামলা ও ভাংচুর চালায়। 
আনোয়ার মিয়া বলেন, আমরা মসজিদের ভূমিদাতা। অথচ মসজিদের ক্যাশিয়ার হিসেবে যে তিনজনকে রাখা হয়েছে, সেখানে আমাদের কোন লোক নেই। শিহাব উদ্দিন তার লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে আমার বাড়িটি সম্পূর্ণরূপে ভাংচুর করেছে। আমাদের ১৫/২০ জন লোককে আহত করেছে। শিহাব উদ্দিন বলেন, গ্রামের লোকজন সিদ্ধান্ত নিয়ে আমিসহ তিনজনকে মসজিদের ক্যাশিয়ার নিযুক্ত করেন। আমরা ব্যাংকে যৌথ একাউন্ট করতে গেলে আনোয়ার মেম্বার বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমি মুরুব্বিদের বিষয়টি জানাই। এরই জের ধরে আনোয়ার মেম্বারের নেতৃত্বে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। তারা আমাদের ১৫/২০ লোককে মারধর করে আহত করেছে।

দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ইতিষা দাস বলেন, দিরাই উপজেলার খেজাউড়া গ্রামে দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আমরা এ পর্যন্ত ২৫ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। কয়েকজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী মোক্তাদির হোসেন বলেছেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।