দু’একদিনের মধ্যেই কঠোর বিধিনিষেধ : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনা ঠেকাতে আসছে কঠোর পদক্ষেপ
প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারও বাড়তে শুরু করেছে। এই অবস্থায় এখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে না উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনা ঠেকাতে আমরা কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছি। করোনার সংক্রমণ দ্রুত বৃদ্ধি পেলে স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার মতো ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তিনি বলেন, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে কারিগরি কমিটির প্রস্তাবনা অনুযায়ী দু’একদিনের মধ্যেই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে। আজ শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় শুভ্র সেন্টারে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা আগের চেয়ে ৪০০ গুণ বেশি। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের মতো পরিস্থিত এখনো হয়নি। আক্রান্তের হার অতিরিক্ত বৃদ্ধি পেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জাহিদ মালেক বলেন, চলমান ইউপি নির্বাচনসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এটা খুবই উদ্বেগজনক। নিয়ম না মানলে দেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। সারা দেশে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সকল হাসপাতাল ও নার্স-চিকিৎসকেরা সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সকল দোকানপাট রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। রেস্টুরেন্টে টিকা সনদ ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। বাস-ট্রেন-লঞ্চসহ যাত্রীবাহী সকল পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মাস্ক ছাড়া বাইরে গেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল-জরিমানা করবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে করোনা সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই এখনো অর্থনীতির চাকা ঘুরছে। কল-কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে পারছে। এই পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) এক ডোজ টিকা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা যাবে না বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী নানা নির্দেশনাও দেন। ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, লঞ্চ ও ট্রেনে উঠতে গেলেও ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করার চিন্তা করছে সরকার। এ ছাড়া বাড়ির বাইরে মাস্ক ছাড়া চলাচল বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন না নিলে ট্রেন ও উড়োজাহাজে চলাচল করা যাবে না। সেই সঙ্গে রেস্তোরাঁ, শপিংমলেও প্রবেশ করা যাবে না। এ ছাড়া সামাজিক রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমাগম সীমিত রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনে অর্ধেক সিট ফাঁকা রেখে যাত্রী চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ভাড়া বাড়ানো যাবে না। এটি পরিবহন সংশ্লিষ্টদের বলে দেওয়া হবে। বুস্টার ডোজ নিয়ে তিনি বলেন, বুস্টার ডোজ দেওয়ার বয়স সীমা ৬০ থেকে কমানো হবে। ফ্রন্টলাইনাররা সবাই শিগগিরই বুস্টার ডোজ পাবেন। কারিগরি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে এসব সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর করা হবে সেটি দু-এক দিনেই জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: