দুই নৌকায় পা দিয়ে নির্বাচন হয় না: শামীমকে হাইকোর্ট
শামীম হকের করা রিট খারিজ করে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: হাইকোর্টেও প্রার্থিতা ফিরে পাননি ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হক। তার প্রার্থিতা বাতিলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত। এ সংক্রান্ত শুনানিতে হাইকোর্ট শামীম হককে বলেন, ‘দুই নৌকায় পা দিয়ে নির্বাচন হয় না’।
শামীম হকের করা রিট খারিজ করে সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. ইকবাল কবীর ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শামীম হকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট সাঈদ রাজা ও অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এ একে আজাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান ও ব্যারিস্টার তানজীবুল আলম।
শুনানির সময় হাইকোর্ট শামীম হককে বলেন, ‘দুই নৌকায় পা দিয়ে নির্বাচন হয় না।’ এসময় শামীম বলেন, ‘মাই লর্ড, আমি দুই নৌকা ত্যাগ করে এখন এক নৌকাতেই পা দিয়েছি। এ কথার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বলেন, ‘এভাবে নির্বাচন হবে না।’
এর আগে ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানিতে এ রায় দেয় ইসি। তখন শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। উপস্থিত ছিলেন অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব। শামীম হক নেদারল্যান্ডসের নাগরিক।
শামীম হক তার হলনামায় এ তথ্য গোপন করায় মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ।
তখন এ কে আজাদের আইনজীবী মো. গোলাম কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ২০২১ বা ২০২২ সালে শামীম হক বাংলাদেশি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। তার ওই আবেদনে উল্লেখ করেন তিনি নেদারল্যান্ডসের নাগরিক। এ কাগজের ওপর ভিত্তিতেই আমরা ইসিতে কাগজপত্র পেশ করি। এ আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এর যথার্থতা যাচাইয়ের জন্য নির্দেশ দেয়।
তিনি আরও বলেন, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, শামীম হক যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, সে কাগজে তিনি নেদারল্যান্ডস নাগরিকত্ব বাতিলের জন্য ঢাকাস্থ ডাচ দূতাবাসে আবেদন করেন ৪ ডিসেম্বর। কিন্তু মনোনয়ন দাখিল করেন ৩০ নভেম্বর। এরপর ১৪ ডিসেম্বর ডাচ দূতাবাস তাকে (শামীম হক) চিঠি পাঠায় যে, ফর্ম ফিলাপ করে তাকে দূতাবাসে আসতে হবে নাগরিকত্ব বাতিলের জন্য।
গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা ওনার কাগজপত্র দাখিল করে প্রমাণ করি ১৪ ডিসেম্বর অবধি ওনার (শামীম হক) নাগরিকত্ব বাতিল হয়নি। ওনার কাগজপত্রে ওপর নির্ভর করেই আপনারা আপিল নিষ্পত্তি করতে পারেন। নির্বাচন কমিশন এসব বিবেচনা নিয়ে আমাদের আপিল মঞ্জুর করে।
সংবিধানের ৬৬ (২) (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন।’
সংবিধানের উক্ত অনুচ্ছেদের অনুরূপ বিধানই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১২(১)(৬) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত হয়েছে।