ঢাকায় ১০৩২ ওয়ার্ড নেতার তালিকা করেছে ডিএমপি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকার ১২৯টি ওয়ার্ডের ১০৩২ জন বিএনপি নেতাকর্মীর তালিকা তৈরি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সক্রিয় ৫ জন কার্যনির্বাহী সদস্যের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে। যে সব ওয়ার্ডে বিএনপি’র নতুন কমিটির জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে সেই কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ সক্রিয় ৫ জন সদস্যকে রাখা হয়েছে তালিকায়। তালিকা থেকে বাদ যাননি বিএনপি’র অঙ্গ সংগঠন মহিলা দলের নেতাকর্মীরাও। ২৪০০ পৃষ্ঠার বিস্তারিত এই ডকুমেন্টে নেতাকর্মীদের বিস্তারিত পরিচয়, বাসার ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, গ্রামের ঠিকানা, পেশার বিবরণ, আগে কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছিলেন কিনা এবং বর্তমান রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলে তাদের কার্যক্রম উল্লেখ করা আছে। এ ছাড়াও এসব নেতা এলাকাভিত্তিক বিএনপি’র কোন গ্রুপের সঙ্গে রাজনীতি করেন তা সেখানে উল্লেখ করা আছে। কার বিরুদ্ধে পুরনো কতোগুলো এবং কী ধরনের মামলা রয়েছে তাও উল্লেখ আছে তালিকায়। বিস্তারিত তথ্যে এলাকাভিত্তিক সোর্সের মাধ্যমে কিছু নেতার ছবিও সংযুক্ত করেছে পুলিশ। এই তালিকার জন্য দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকার ৫০ থানার ২৮৪টি বিট পুলিশের প্রধানেরা। তাদের এই তালিকা করতে আবার সহযোগিতা করেছে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতিরা। গত ৭ই জুন থেকে থেকে ১০ই অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বিএনপি’র নেতাকর্মীদের দ্রুত তথ্য পেতে এই বিস্তারিত ডেটাবেজ তৈরি করা হয়েছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) একেএম হাফিজ আক্তার রাসেল গতকাল দুপুরে জানান, ‘বৈধ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা কোথায় বসবাস করেন পুলিশ এটা জানতেই পারে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম বিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ‘প্রায় ৩ মাস ৩ দিনে এই ডাটাবেজটি তৈরি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা এবং জনস্বার্থ রক্ষা, সহিংসতা রোধে এ মামলার আসামিদের ধরার জন্য এই ডাটা সংগ্রহ করা হয়। ডিএমপি জানায়, আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠের রাজনীতিতে আবার সক্রিয় হয়েছে বিএনপি। বিভিন্ন স্থানে ঘটছে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা। গত বছর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের হলেও আসামি ধরতে বেগ পেতে হয়েছে পুলিশের। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি ধরা হলেও অনেকেই এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলে গেছেন। এমন একটি ডাটা তৈরি করার জন্য পুলিশ সদর দপ্তরের ক্রাইম বিভাগ থেকে ডিএমপিকে তাগিদ দেয়া হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে এই বিস্তারিত ডাটাবেজটি তৈরি করে পুলিশ।
সূত্র জানায়, বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এলাকায় বিএনপি’র নেতাদের তালিকায় বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। অনেক নেতাকর্মীর সুনির্দিষ্ট ঠিকানা পায়নি পুলিশ। অনেকেই হামলা ও মামলার শিকার হয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাছাড়া। এদের তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলদের সহযোগিতা নিয়েছে পুলিশ। তালিকায় বিএনপি’র এলাকাভিত্তিক কয়টি গ্রুপ রয়েছে তা উল্লেখ করা ছাড়াও কোন নেতা-সদস্যরা কোন গ্রুপের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে থাকে তার বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
তালিকা থেকে মহিলা দলের নেতাকর্মীদের নামও বাদ যায়নি: পুলিশের খাতায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে সেতারা জাহান শান্তা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে শাহিনূর বেগম, সদস্য সচিব হিসেবে রেহানা বেগমের নাম। এ ছাড়াও কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নাম দেয়া হয়েছে সুমি বেগম, শাহিদা বেগম, পপি আক্তার ও রিনা বেগমের নাম। সূত্র জানায়, ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা দলের আহ্বায়কের হিসেবে মজিরণ নেসা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে রাশেদুন আক্তার ও সদস্য সচিব হিসেবে রাবেয়া বেগমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে পুলিশের তালিকায় রাফেদুন আক্তার, সাবেদা বেগম ও মোসা. কুলসুম বেগমের বিস্তারিত পরিচয় দেয়া হয়েছে। সূত্র: মানবজমিন
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews