ডিবিপ্রধানের কার্যালয়ের খাবার নিয়ে যা বললেন গয়েশ্বর
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এ কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ডিবিপ্রধানের কার্যালয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের খাবার নিয়ে গতকাল থেকে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কালকের ঘটনা নিয়ে বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কার্যালয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে যে সকল খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই খাবার খাইনি আমি। ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদের জন্য বাসা থেকে যে খাবার পাঠানো হয়েছে সেই খাবারই খেয়েছি।
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে নিজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এ কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ডিবি কার্যালয়ে তার জন্য যে খাবারের আয়োজন করা হয়, সে খাবার তার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপযোগী ছিল না। একই সাথে এই খাবার নিয়ে তার সন্দেহও ছিল। সে কারণে তিনি ডিবি কার্যালয়ে ওই খাবার খাননি। গয়েশ্বর চন্দ্র আরও জানান, সৌজন্যতা রক্ষায় ডিবিপ্রধানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে হারুনের জন্য বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার থেকে ভাতসহ হালকা সবজি ও রুই মাছের একটি টুকরা খান তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ডিবিপ্রধান আমাকে অনুরোধ করেছেন এবং রুই মাছটি তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর যেহেতু ডিবিপ্রধান নিজেই খাবারটি খাচ্ছেন, তখন আমার মনে হলো- এই খাবার খেলে, আমার সমস্যা হবে না। তবে আমাকে আপ্যায়ন করে তার ছবিসহ ভিডিও ধারণ করে বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, যারা এ কাজটি করেছেন তারা অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচায়ক। একধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক। এতে সরকার কী প্রমাণ করতে চায় যে আমরা হা-ভাতে? ভিক্ষা করে খাই? গ্রামের ভাষায় বলা হয় ‘খাইয়ে খোটা দেওয়া’। ডিবি অফিসে আমার সঙ্গে যা করা হলো তা ঠিক ওই রকমই। আমার নিজের বাড়িতে তো বিভিন্ন সময় অনেক লোক খায়। সেটাও আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। কিন্তু এই খাবারের ছবি উঠিয়ে কি আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেব? এটা কি আমার জন্য ভালো হবে?
গয়েশ্বর চন্দ্র দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে আরও বলেন, সরকারের কোনো প্রলোভন গয়েশ্বরকে কিনতে পারবে না। সরকারের কাছে এত টাকা নেই যে, আমাকে কিনতে পারে। হ্যাঁ, সরকার গ্রেফতার করতে পারে, এমনকি প্রাণও নিতে পারে- এই শক্তি সরকারের আছে। কিন্তু গয়েশ্বরকে কখনো কিনতে পারবে না।
গয়েশ্বর বলেন, ঈশ্বরের কাছে আমার একটাই প্রার্থনা; চিতায় ওঠার আগে যেন এই সরকারের পতন দেখে যেতে পারি। চলমান জনসম্পৃক্ত আন্দোলন সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির এই নেতা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে সোনারগাঁও হোটেলের খাবার এনে আপ্যায়ন করার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে। ভাইরাল হওয়া সেই ছবিতে দেখা যায়, গয়েশ্বরের প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছেন ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ।
একই দিন ধোলাইপাড়ে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে সংঘর্ষের পর দুপুর ১২টার দিকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নিয়ে আসা হয় ডিবিপ্রধানের কার্যালয়ে। পরে বিকাল ৩টার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে গয়েশ্বরকে নয়াপল্টনে তার ব্যক্তিগত কার্যালয় পৌঁছে দেওয়া হয়।