টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে কিশোরীর ধর্ষণ মামলা

গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় তিনি এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়া (বড় মনি) টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব।

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে কিশোরীর ধর্ষণ মামলা
টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে কিশোরীর ধর্ষণ মামলা

প্রথম নিউজ টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন এক কিশোরী। গত বুধবার রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় তিনি এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়া (বড় মনি) টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির মহাসচিব। তিনি টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনি) বড় ভাই। এ ছাড়া মামলায় গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী নিগার আফতাবকেও আসামি করা হয়েছে। মামলায় ওই কিশোরী অভিযোগ করেন, গোলাম কিবরিয়া তাদের পূর্ব পরিচিত। হোয়াটসঅ্যাপে তাদের কথা হতো। ওই কিশোরীর ভাইয়ের সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ হলে সে গোলাম কিবরিয়াকে বিষয়টি জানায় এবং তিনি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

একপর্যায়ে গত ১৭ ডিসেম্বর শহরের আদালত পাড়ায় গোলাম কিবরিয়া নিজের বাড়ির পাশে একটি ১০ তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্লাটে যেতে বলেন। সেখানে গেলে তাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন গোলাম কিবরিয়া। কিন্তু তাতে রাজি না হলে ওই কিশোরীর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে একটি কক্ষে আটকে রাখেন গোলাম কিবরিয়া। আটকে রাখার প্রায় তিন ঘণ্টা পর তাকে ধর্ষণ করেন তিনি।

ওই কিশোরী আরও অভিযোগ করেন, ধর্ষণের ঘটনা কারও কাছে প্রকাশ করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন গোলাম কিবরিয়া। এরপর থেকে প্রথমবার ধর্ষণের সময় তোলা ছবি দেখিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করতে থাকেন তিনি। ফলে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি গোলাম কিবরিয়াকে জানালে তাকে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন তিনি।

সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় গত ২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে গোলাম কিবরিয়া ওই কিশোরীকে আদালত পাড়ায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। রাজি না হওয়ায় ওই বাসার একটি কক্ষে তাকে তালাবদ্ধ করে রাখেন এবং পুনরায় ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী তাকে মারধরও করে। এতে ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবিবুর রহমানকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. খন্দকার সাদিকুর রহমান জানান, গাইনি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট নিসফুন নেসাকে প্রধান করে তিন সদস্যের মেডিকেল বোর্ড করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে ডা. সাবেকুন নাহার ও ডা. রুবানা ইয়াসমীন। এই বোর্ড ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।