জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সড়ক অবরোধ, বিকাল ৪টা পর্যন্ত আলটিমেটাম, যান চলাচল বন্ধ

জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের সড়ক অবরোধ, বিকাল ৪টা পর্যন্ত আলটিমেটাম, যান চলাচল বন্ধ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: সাত দফা দাবিতে রাজধানীর শ্যামলীতে শিশু মেলার সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা। রোববার সকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। অসংখ্য যাত্রীরা বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন।

তাদের সাত দফা দাবিগুলো হলো-

১. ২৪’র যোদ্ধাদের মধ্যে আহত ও শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার। 
২. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপরসারণপূর্বক গ্রেপ্তার। 
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে প্রণয়ন।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন। 
৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত ও শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। 
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয়টি সুসংহত করতে হবে।

অবরোধকারীরা তাদের দাবি মেনে নিতে বিকাল আজ ৪টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও স্বীকৃতি না দিলে তারা সচিবালয়ের দিকে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

সরজমিনে দেখা যায়, সাভার, গাবতলী, মিরপুর, আগারগাঁও, গুলিস্তান ও আজিমপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো থমকে রয়েছে। এসময় বাস থেকে নেমে অনেককেই পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।

নাজমা বেগম নামে ভুক্তভোগী এক নারী মানবজমিনকে বলেন, ‘দুই বাচ্চাকে নিয়ে আমি আজিমপুর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাচ্ছিলাম। রাস্তা বন্ধ থাকায় সন্তানদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আসাদগেট থেকে পায়ে হেঁটে এখন গাবতলীর দিকে যাচ্ছি। ত্রিশ মিনিটের বেশি সময় বাসে বসে ছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে নেমে গিয়েছি।’

নূর আলম নামে আরেকজন বলেন, ‘সকালে বাচ্চাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য শিশু হাসপাতালে এসেছি। এখন এক ঘণ্টা ধরে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি। এই অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে হেঁটে যাওয়াও কষ্টকর। এখন গাবতলী হেঁটে যাবো। সেখানে গিয়ে বাসে সাভার যাবো।’

আজিজুল হক একজন হার্টের রোগী। তিনি ইকো পরীক্ষার জন্য ফার্মগেট থেকে বাসে উঠেছিলেন। তিনি বলেন, ‘ফার্মগেট থেকে বাসে উঠে দেখি বাস আর সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না। এরপর নেমে হাঁটতে শুরু করি। সেখান থেকে প্রথমে কল্যাণপুর একটি হাসপাতালে যাই ইকো পরীক্ষার জন্য। এখন আবার কল্যাণপুর থেকে হেঁটে শ্যামলী এসেছি। এখন আর হাঁটতে পারছি না, অসুস্থ হয়ে পড়েছি।

তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে দাবি নিয়ে রাস্তা বন্ধ করার কোনো যৌক্তিকতা দেখছি না। আমার মতো আরও শত শত মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’