জ্বালানি সনদ চুক্তি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: সেমিনারে বক্তারা

কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত এক সেমিনারে এই অভিমত প্রকাশ করেন বক্তারা।

জ্বালানি সনদ চুক্তি দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি: সেমিনারে বক্তারা

প্রথম নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশের মতো ছোট রাষ্ট্রের জন্য জ্বালানি সনদ চুক্তি (এনার্জি চার্টার ট্রিটি বা ইসিটি) সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি বলে মনে করা হচ্ছে। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত এক সেমিনারে এই অভিমত প্রকাশ করেন বক্তারা।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান বলেন, চলতি বছরের শুরুতে ইউরোপীয় কমিশনের সংশোধন প্রস্তাবকে ঘিরে জ্বালানি সনদ চুক্তি (এনার্জি চার্টার ট্রিটি বা ইসিটি) আবার আলোচনায় এসেছে। বাংলাদেশ সরকারও এই চুক্তিতে সই করার বিষয়ে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে প্রণীত হয় এই চুক্তি। অন্য কথায়, এই চুক্তিতে সইয়ের মাধ্যমে যেকোনও রাষ্ট্র জ্বালানি খাতে বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট সবার বিনিয়োগের নিরাপত্তা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক স্বার্থ রক্ষার আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর বাধ্যবাধকতা মেনে চলার নিশ্চয়তা দেয়।

কিন্তু এই বাধ্যবাধকতা জ্বালানি খাতের বিনিয়োগকারী বড় রাষ্ট্রগুলোর জন্য আশীর্বাদ হলেও বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, জ্বালানি সনদ চুক্তিটির ধারা ১৮ চুক্তি স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্রের জ্বালানি সম্পদের ওপর তার সার্বভৌমত্ব ও অধিকারের নিশ্চয়তা দিলেও এর ঘোষণাপত্রটি বিপরীত কথা বলে। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, সার্বভৌমত্ব নীতিটি যেন চুক্তির অন্য বিধান প্রয়োগে অন্তরায় না হয়। একইভাবে চুক্তির ধারা ৫, ১১ ও ১৪ অনুযায়ী, কোনও স্বাগতিক রাষ্ট্রেই বিদেশি বিনিয়োগকারীকে তাদের নিজস্ব কোনও পণ্য ব্যবহারে বাধ্য করার অধিকার রাখে না। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় কাউকে কর্মসংস্থানের ব্যাপারেও স্বাগতিক রাষ্ট্র বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দিতে পারে না। অথচ বিনিয়োগকারী ব্যবসার পুঁজি, মুনাফা, উদ্বৃত্ত অর্থ, কর্মচারী-কর্মকর্তাদের বিভিন্ন রকম পারিশ্রমিক, উপহার ইত্যাদি বিনা বাধায় নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আইনগত অধিকার রাখে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে বা হঠাৎ করে কোনও কারণে অথবা বর্তমান শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে বিদেশি বিনিয়োগ বা বিনিয়োগকারীর ওপর কোনও কর ধার্য করলে কিংবা ভিন্ন কোনও অবস্থান নিলে, সেই প্রতিষ্ঠান স্বাগতিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার আইনগত অধিকার রাখে।

জ্বালানি সনদ চুক্তি বা ইসিটি, যা ১৯৯৮ সাল থেকে কার্যকর হয়। বর্তমানে ৫৩টি দেশ ও অর্থনৈতিক জোট এ চুক্তির আওতায় রয়েছে। কিন্তু এখন অনেক দেশই এই চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার কথা চিন্তা করছে। সেমিনারে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, জ্বালানি অধিকার সুরক্ষায় অসাধু ব্যবসা প্রতিরোধ করতে হবে। পাইকারি বিদ্যুতের চলতি বছর ৪০ হাজার কোটি টাকার মতো ঘাটতি রয়েছে। সেই ঘাটতি মোকাবিলায় অযৌক্তিকভাবে ব্যয় বৃদ্ধি না করার উপর জোর দিয়ে ঘাটতি মোকাবিলায় বিকল্প তুলে ধরেন তিনি। সেমিনারে ক্যাবের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom