জ্বালানি নীতি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা, যুক্তরাষ্ট্রে বৃদ্ধি পেতে পারে গৃহস্থালির খরচ

জ্বালানি নীতি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা, যুক্তরাষ্ট্রে বৃদ্ধি পেতে পারে গৃহস্থালির খরচ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি দক্ষতার মান বাতিল করার প্রচেষ্টা গৃহস্থালির খরচ কয়েক বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ১২টি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মানদণ্ড বাতিলের উদ্যোগ নিলেও, সেটি আইনি বাধার মুখে পড়তে পারে। কারণ, এই পরিকল্পনা বিদ্যুৎ নীতিমালা ও সংরক্ষণ আইন (এনার্জি পলিসি এন্ড কনভারসেশন এক্ট-ইপিসিএ)-এর ‘অ্যান্টি-ব্যাকস্লাইডিং’ ধারায় বিদ্যমান সাশ্রয়ী মানদণ্ড দুর্বল করে ফেলবে।

দ্য ভার্জের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবেশ ও ভোক্তা অধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাদের মতে, মার্কিন জ্বালানি বিভাগ (ডিওই)-এর এই পদক্ষেপ ফেডারেল আইন লঙ্ঘন করছে। ডিওই-এর পক্ষ থেকে এখনো এই পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে কোনো মন্তব্য আসেনি।

২০২৫ সালের ১ মে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী স্মারক স্বাক্ষর করে ডিওই-কে নির্দেশ দেন বিদ্যমান কিছু এনার্জি সাশ্রয়ী মানদণ্ড প্রয়োগ বন্ধ রাখতে। এই পদক্ষেপ তার প্রশাসনের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রণ-মুক্তির প্রচেষ্টার অংশ হলেও সমালোচকরা বলছেন, এটি গত কয়েক দশকের শক্তি সাশ্রয়ে অর্জিত অগ্রগতিকে নষ্ট করবে।

২০২৫ সালের মে মাসে আরেকটি বিতর্কিত খবর সামনে আসে—পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ) তাদের স্বেচ্ছাসেবী ‘এনার্জি স্টার’ প্রোগ্রাম বন্ধ করতে পারে। এই প্রোগ্রামটি মার্কিন পরিবারগুলোকে গড়ে বছরে প্রায় ৪৫০ ডলার বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে সাহায্য করে। এই প্রোগ্রাম বন্ধ হয়ে গেলে ডিওই-এর নিয়ম শিথিল করার সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিলে এটি একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।

অ্যাপ্লায়েন্স স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাওয়ারনেস প্রজেক্ট (এএসএপি) বলছে, এই ১২টি মানদণ্ড বাতিল হলে ভোক্তা ও ব্যবসায়িক খাতে পণ্যের জীবনকালে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে যাবে ৪৩.২ বিলিয়ন ডলার।
ডিওই যদিও দাবি করেছে, এই নিয়ম বাতিলের ফলে ১১ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে, এএসএপি বলছে খরচ হবে তার প্রায় পাঁচগুণ।  এএসএপি-এর উপপরিচালক জোয়ানা মাউয়ার বলেন, ‘ডিওই শুধু কতটা সাশ্রয় হবে তা দেখছে, কিন্তু খরচের দিকটা একেবারেই উপেক্ষা করছে।’

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী মানদণ্ডগুলো মাইক্রোওয়েভ, কুকিং টপ, এয়ার পিউরিফায়ার, ব্যাটারি চার্জার, ডিহিউমিডিফায়ার এবং পোর্টেবল এসির মতো পণ্যের জন্য ন্যূনতম কর্মক্ষমতার সীমা নির্ধারণ করে, যাতে কম বিদ্যুৎ খরচ হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০২০ সালে পোর্টেবল এসির নতুন মানদণ্ড চালুর ফলে ভোক্তাদের ১ ডলার বিলিয়ন অতিরিক্ত খরচ হলেও ৩০ বছরে ৪.১ ডলার বিলিয়ন বিদ্যুৎ সাশ্রয় হতো।

জ্বালানি সচিব ক্রিস রাইট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা সাধারণ বোধ ফিরিয়ে আনছি — গ্রিন নিউ ডিলের মতো কল্পনাপ্রসূত চিন্তাভাবনার নামে আরোপিত বিধিনিষেধ তুলে দিচ্ছি।
’ ডিওই বলছে, এই নিয়ম শিথিলের ফলে উৎপাদন খরচ কমবে এবং গ্রাহকরা সস্তা, যদিও কম দক্ষ, পণ্য কিনতে পারবেন। তবে এএসএপি বলছে, এই সিদ্ধান্ত দীর্ঘমেয়াদে নিম্নআয়ের পরিবারগুলোর ওপর বেশি চাপ ফেলবে, কারণ তারা আয়ের বড় অংশই ব্যয় করে বিদ্যুৎ বিলের পেছনে।