ছেলে নিখোঁজ, অভিযোগ শিক্ষকের দিকে

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে এ আবেদন জানান তিনি। এসময় তি‌নি স্কুলের শিক্ষক আলমগীর মাষ্টারের দি‌কে অভিযোগ ক‌রেন।

ছেলে নিখোঁজ, অভিযোগ শিক্ষকের দিকে

প্রথম নিউজ, ঢাকা: নিখোঁজ হওয়া ছেলে অভিজিত মাঝিকে ফেরত পাওয়ার সহায়তার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছে বাবা অপু মাঝি। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে বসে এ আবেদন জানান তিনি। এসময় তি‌নি স্কুলের শিক্ষক আলমগীর মাষ্টারের দি‌কে অভিযোগ ক‌রেন।

অপু মাঝি বলেন, আজ থেকে ৬৪৯ দিন আগে ২০২২ সালের মে মাসের ১৮ তারিখ সকাল আনুমানিক ৭টার দিকে তার স্কুলের শিক্ষক আলমগীর মাষ্টারের সঙ্গে ভ্যানে স্কুলে যায়। তারপর থেকে আমার ছেলে আর বাড়ি ফিরে আসেনি।

আমার বাড়ি শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া থানার পুটিয়াকান্দিতে। আমার ছেলে সে সময় নড়িয়া থানাধীন মহিষখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনির ছাত্র ছিলো। সে পড়াশোনায় মেধাবী ছিলো ও তার রোল নম্বর ছিলো ০১। মহিষখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সব শিক্ষক আমার ছেলেকে ভালোবাসতো।

আমার ছেলে অভিজিত মাঝি তার স্কুলের আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক আলমগীর মাষ্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তো। আলমগীর মাষ্টার অজ্ঞাত কারনে আমার ছেলেকে আরবী বই দিয়ে আরবি অক্ষর ও ভাষা শিখালে আমাদের প্রথমে সন্দেহ হয়। তারপর হঠাৎ সে আমার ছেলেকে ড. আয়েয আল কারনী লিখিত 'হতাশ হবেন না' অস্ত্র সজ্জিত যুবকের ছবি ছাপানো বই দেয় এবং পড়ায় বিষয়টি জঙ্গী গ্রুপ সংশ্লিষ্ট বলে আমি মনে করি। কারন, উক্ত আলমগীর মাষ্টার আইসিটি বিষয়ক শিক্ষক, সে আরবি শিক্ষক নয় এবং আমার ছেলে তার কাছে আরবী শিক্ষার জন্য প্রাইভেট পড়ত না। 

অপু মাঝি আরও বলেন, আমার ছেলের নিখোঁজ হওয়ার ২/৩ দিন পর একটি অপরিচিত ০৯৬৩৮৭১৭০৭১ নম্বর থেকে আমি নড়িয়া থানায় বসে থাকা অবস্থায় থানার ওসি সামনেই আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে হুমকি স্বরুপ ফোন আসে। যা থানার ওসি সাহেব অবগত আছেন। তারপর আমরা আমাদের ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেছি, কিন্তু থানায় আমাদের এজাহার গ্রহন করে নাই বিধায় আমরা শরীয়তপুর কোর্টে মামলা করেছি। মামলা নারী ও শিশু পিটিশন মামলা নং- ১৯৫/২০২২ইং, পিবিআই এর মাধ্যমেও খোঁজ পাইনি।

তিনি আরও বলেন, আলমগীর মাষ্টারের আরবি হাতের লেখা শরীয়তপুর কোর্টে জমা দেওয়া আছে এবং জঙ্গী বই 'হতাশ হবেন না' নড়িয়া থানায় জমা দেওয়া আছে। আমরা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে অভিযোগ করেছি। আমরা মনে করি, আলমগীর মাষ্টার আমার ছেলেকে পাচার করে দিয়ে তার কিডনী বিক্রি করে ফেলেছে অথবা কোন জঙ্গী গ্রুপে পাঠিয়ে দিয়েছে।

এমতাবস্থায় আলমগীর মাষ্টারের হাত থেকে আমার ছেলেকে আমাদের কাছে ফেরত পেতে সহায়তা করার জন্য আপনার কাছে একান্তভাবে অনুরোধ করিতেছি।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ অভিজিত মাঝির মা সবিতা মাঝি, ছোট বোন অজান্তা মাঝি, দাদা সুভাষ মাঝি, ফুপু সুমা রানী, মামা রবীন্দ্র মন্ডল প্রমুখ।