চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে শাকসবজি

আজ শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ কাঁচাবাজার ও ওয়ারীর নারিন্দা কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে শাকসবজি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: কয়েকদিন আগেই চড়া হয়েছিল শাকসবজির বাজার। এখন রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় শাকসবজির বাজার অনেকটা সেই চড়া অবস্থায় রয়েছে। তবে দাম বেড়েছে শসার। কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। আজ শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার দয়াগঞ্জ কাঁচাবাজার ও ওয়ারীর নারিন্দা কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

সর্বোচ্চ দামি সবজি শিম। বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে। আর সবচেয়ে কম দামে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। ১০০ টাকার বেশি দামের সবজির তালিকায় রয়েছে টমেটো ও গাজর। সবজি দুটি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১৩০ টাকা ও ১৬০ টাকা দরে। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শাকের দাম আগের মতোই আছে।

বাজার দুটি ঘুরে দেখা যায়, দোকানভেদে ব্যবসায়ীরা সবজি বিক্রি করছেন গুণ ও মান অনুযায়ী বিভিন্ন দামে। দেশি সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। বরবটি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা হাইব্রিড ৮০ টাকা আর দেশি ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ওলকচু বড় ৫০ টাকা, ছোট ৩০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা হালি ২৫ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল ৪০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, কচুর মুখী ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

এ ছাড়া পুঁইশাক ২০ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, ডাটা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

দয়াগঞ্জ বাজারে কথা হয় ক্রেতা শামসুল আলমের সঙ্গে।  তিনি বলেন, আমরা নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও সীমিত আয়ের মানুষ। সবকিছুর দাম বেড়েছে। মাংস কিনে খাওয়া তো দূরের কথা ভালো মাছ কিনেও খেতে পারি না। ভালো কিছু কিনতে গেলে পকেটে আর টাকা থাকে না। ফলে শাকসবজি খেয়েই দিন পার করছি। আর সেই শাকসবজির বাজারেও আগুন। এ দেশে গরিব বাঁচতে পারবে না। দেশের ৮০ শতাংশ গরিব মানুষ সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

নারিন্দা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা মাজহার উদ্দিন  বলেন, সবকিছুর দাম তো বেড়েছে। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ২ টাকার জিনিসকে ৫ টাকায় বিক্রি করছে। বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। ফলে যে যার মতো দাম হাঁকিয়ে মানুষ ঠকাচ্ছে। বেশি মুনাফা করছে ব্যবসায়ীরা, আর না খেয়ে আর কম খেয়ে মরছে সাধারণ গরীব মানুষ। দেশে সবকিছুর দাম বেড়েছে কিন্তু বাড়েনি মানুষের বেতন আর মানুষের মূল্যায়ন। রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিরা যে যার আখের গোছাচ্ছে। জনগণের কথা কেউই চিন্তা করে না।

বাজার করতে আসা সালামুল হক  বলেন, আমি একটি বেসরকারি কোম্পানিতে ছোট চাকরি করি। বাজারে সবজির দাম বাড়তি। আগে বাজারে ৪-৫ রকমের এক কেজি করে সবজি নিতাম আর এখন বাছাই করে ২ বা ৩ রকমের নিতে হচ্ছে। অল্প খেয়ে কোনো মতে বেঁচে আছি, আর দিন পার করছি।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন এখন বর্ষাকাল হওয়ায় সবজি উৎপাদন কম। এছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর খেকেই সবজির দাম বেড়েছে। তারা বলেন, বেশি দামে কিনলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়, আর কম দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করতে হয়। সামান্য লাভ হয়। আড়তে দাম বেশি, এ ছাড়া সব কিছুর খরচও বেড়েছে আগের চেয়ে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।