চীনের নতুন মানচিত্রে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ
সেই সঙ্গে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আকসাই চীনকেও।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় নরেন্দ্র মোদি ও শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পরই নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করল চীন। সোমবার তারা নতুন যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, তাতে গোটা অরুণাচল প্রদেশকে চীনের অংশে ঢোকানো হয়েছে। সেই সঙ্গে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আকসাই চীনকেও। ভারতের এই দুই অংশই শুধু নয়, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকেও তারা তাদের অংশ বলে দাবি করেছে।
চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বিরোধ গত ছয় দশকের। ২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর সম্পর্কের অবনতি লক্ষ করা যায়। ভারত সরকারিভাবে স্বীকার না করলেও বিরোধীদের অভিযোগ, ওই সময় লাদাখের অন্তত ২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চীনা ফৌজ গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ২০২০ সালের সংঘর্ষ পূর্ববর্তী স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে ভারত বারবার দাবি জানিয়ে আসলেও চীন এখনো তা মানেনি।
সেই বরফ গলাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘ব্রিকস’ সম্মেলনের এক ফাঁকে মোদি–শি ঘরোয়া বৈঠক হয়। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা বলেছিলেন, দুই নেতা লাদাখ সমস্যার সমাধানে সহমত হয়েছেন। ওই বৈঠকের পর পরই চীনের এই ম্যাপ প্রকাশ সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে অবশ্যই সহায়ক নয় বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা।
অরুণাচল প্রদেশকে চীন দক্ষিণ তিব্বত বলে দাবি করে। ভারতের মতে, ওই প্রদেশ তাদের ছিল, আছে ও থাকবে। ১৯৬২ সালের যুদ্ধে আকসাই চীন তারা দখল করেছিল বলে দাবি জানিয়ে আসছে চীন। ভারত সেই দাবি মানতে নারাজ।
লক্ষণীয়, চলতি বছরের মে মাসে অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগরে দুই দিন ধরে জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকে চীন গরহাজির ছিল। মে মাসের শেষ সপ্তাহে ওই বৈঠকের পর পরই চীন অরুণাচল প্রদেশের ১১টি জায়গার নাম তাদের ভাষায় রাখে। এমন নামকরণ তারা ২০১৭ ও ২০২১ সালেও করেছিল। ভারত তখনো আপত্তি জানিয়েছিল।
চলতি বছর চীনা ভাষায় এলাকার নামকরণ প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছিলেন, নামকরণ যাই করা হোক, তাতে অরুণাচল প্রদেশের বাস্তবতায় হেরফের ঘটে না। এবার চীন গোটা অরুণাচল প্রদেশকেই তাদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করল শি–মোদি বৈঠকের রেশ কাটতে না কাটতেই।