গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে ১৫০ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার

 গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে ১৫০ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : এজিয়ান সাগরীয় গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপ থেকে শিশুসহ ১৫০ জনেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছে দেশটির উপকূলরক্ষীরা। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) তাদের উদ্ধার করা হয়। এই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বেশিরভাগই ছোট নৌকা নিয়ে তুরস্ক থেকে রওনা হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ দিন গ্রিসের সেরিফোসের সাইক্লেডসের দক্ষিণ উপকূল থেকে ৬১ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়।

হেলেনিক কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, সাগরে বিপদসংকুল অবস্থায় পড়া প্রায় ১৫ মিটার দীর্ঘ নৌকাটিতে ঠাসাঠাসিতে করে ছিলেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। উদ্ধার অভিযানে চারটি টহল জাহাজ, একটি বিমান ও ট্যাঙ্কার জাহাজ অংশ নিয়েছে।

অভিবাসনপ্রত্যাশীদের এথেন্সের কাছের একটি আশ্রয়শিবিরে নেওয়া হয়েছে। আর উদ্ধার করা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্য থেকে মানবপাচারে জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করা হয়েছে।

সম্প্রতি তুরস্ক থেকে অনিয়মিতভাবে গ্রিসে প্রবেশকারী মানুষের সংখ্যা বেশ বেড়েছে। গেল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) থেকে শনিবারের (২ সেপ্টেম্বর) মধ্যে অন্তত পাঁচশ অভিবাসনপ্রত্যাশী গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপে পৌঁছেছেন।

অভিবাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেসবোস, চিওস, সামোস, লেরোস এবং কোস দ্বীপের নিবন্ধন শিবিরে মানুষের সংখ্যা বিবেচনা করলেও অভিবাসী আগমনের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা যায়।

জুনের শেষের দিকে প্রায় আশ্রয়শিবিরগুলোতে চার হাজার মানুষ ছিলেন। আগস্টের শেষ দিকে এসে সংখ্যাটি বেড়ে হয়েছে আট হাজার ৪৩০। আর আশ্রয়শিবিরগুলোতে মোট ধারণক্ষমতা ১৫ হাজার।

গত দুই মাস ধরে অভিবাসীদের আগমন বেড়ে যাওয়ার পেছনে গ্রীষ্মের ভালো আবহাওয়া এবং পর্যটন মৌসুমে এজিয়ান সাগরে ছোট নৌকার চলাচল বেড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে গ্রিস সরকার। তারা বলছেন, এই সুযোগে মানবপাচারে জড়িত চক্রগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

গত জুনে সাত শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রলার ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের গ্রিস অংশে ডুবে যায়। ওই ঘটনায় মাত্র ১০৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। ওই ঘটনায় শত শত মানুষ ভূমধ্যসাগরে মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। অভিবাসীদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছিল গ্রিস।

অপরদিকে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আশ্রয় আবেদনের সুযোগ না দিয়ে গ্রিক সীমান্তরক্ষীরা তাদের ডিপোর্ট বা জোর করে ফেরত পাঠায় বলে অভিযোগ করে আসছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তবে এমন অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে গ্রিক সরকার।

২০১৫ সালের ইউরোপজুড়ে অভিবাসন সংকটের সময় প্রায় ১০ লাখ মানুষ গ্রিস হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রবেশ করে। এরপরই তুরস্কের সঙ্গে থাকা সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছিল গ্রিস। এরপর অনিয়মিত অভিবাসনকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছিল দেশটি।