গোটা রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আ.লীগ: ফখরুল

গোটা রাষ্ট্রকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে আ.লীগ: ফখরুল

 নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোটা রাষ্ট্রকে তারা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। 

তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকার যারা জনগণের ভোটের নির্বাচিত হয়নি তারা মানুষকে বোকা বানিয়ে গণতন্ত্রগামী মানুষকে হত্যা করে গুম করে খুন করে জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। 

সোমবার (০১ মে) মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে শ্রমিক দল আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিএনপি, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।বেলা আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টায়ই ফকিরাপুল নয়াপল্টন সড়ক পরিপূর্ণ হয়ে যায়। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পিকআপ দিয়ে করা হয় ভ্রাম্যমাণ মঞ্চ। ৪টা ৪০ মিটিনে সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় র্যালী। নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে কাকরাইল, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে শেষ হয় র্যালীটি।

সমাবেশে ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবার সেই পুরনো কাদায় তারা আরেকটি নির্বাচন করতে চায়। আবার মানুষ যেন ভোট দিতে না পারে ভোট চুরি করে যেন ক্ষমতা আসতে পারে এবং তারা যেন আবার ক্ষমতা দখল করতে পারে সেজন্য এখন থেকে তারা হুমকি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখাতে চায়। 

তিনি বলেন, আজকে গোটা বাংলাদেশকে কারাগারে রূপান্তরিত করা হয়েছে। আমাদের অসংখ্য নেতা কর্মীদেরকে গ্রেপ্তার করে রাখা হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার সমস্ত স্বপ্নগুলো ভেঙ্গেচুরে তছনছ করে এই আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল তারই পুনরাবৃত্তিতে আবার একদল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তারা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার নয়, এই সরকার কৃষক বিরোধী সরকার, এই সরকার শ্রমিক বিরোধী সরকার, এই সরকার গণবিরোধী সরকার, জনগণের সাথে এ সরকারের কোন সম্পর্ক নেই। তাই আজকে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। 

ফখরুল বলেন, আজকে আমাদের নিজেদের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, শ্রমিকের স্বার্থে, কৃষকের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে আজকে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। 

ক্ষমতাশীনদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আবার হুমকি দেন অগ্নি সন্ত্রাস করতে দেওয়া হবে না। অগ্নি সন্ত্রাসতো করেন আপনারা। নিজেরা অগ্নি সন্ত্রাস করে বিএনপি উপর দোষ চাপান। বাসের মধ্যে আগুন দিয়ে মানুষ পুরে বিএনপির ওপর দায় চাপান। রাজধানীর গুলিস্তানে পিটিয়ে পিটিয়ে মানুষকে হত্যা করেছেন। 

জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এদেরকে পরাজিত করতে হবে; বলেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশের স্বার্থে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বার্থে গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা দশ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। এর প্রধান দাবি হচ্ছে এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং একটি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করে তাদের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার শ্রমিকদের সরকার কৃষকদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে এই লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লড়াই। লড়াইয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হবে আগামী দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন থাকবে কিনা দেশের মানুষ মুক্ত থাকবে কি থাকবে না। এ লড়াই আমাদের মুক্তির লড়াই, আমাদের স্বাধীনতার লড়াই, এ লড়াই দেশনেত্রীকে মুক্ত করার লড়াই এ লড়াই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার লড়াই।

সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ, মির্জা আব্বাস,  গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী শপু, শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মজুমদার, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ। যোগাযোগ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মামুন প্রমুখ।