কুবি সাংবাদিক ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিতের আদেশ বহাল
প্রথম নিউজ, কুমিল্লা : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ স্থগিতের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত।
বুধবার (৩০ আগস্ট) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।
আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমদ রাজা ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। শিক্ষার্থী ইকবালের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান, ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
এর আগে, গত ১৪ আগস্ট কুবির দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গত ১৩ আগস্ট কুবি শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।
শিক্ষার্থী ইকবাল মনোয়ার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন।
এর আগে, ইকবাল মনোয়ারকে কুবি থেকে দেওয়া বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ আটজনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ইকবাল মনোয়ারের পক্ষে এ আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান।
তিন দিনের সময় দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, কুবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে ডাকযোগে ও ইমেইলে এ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
আইনজীবী শিহাব উদ্দিন বলেন, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি। এছাড়া তার সংবাদে উল্লিখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী, শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোনো বোর্ড ও বিধি তৈরি হয়নি । এ অবস্থায় কুবি প্রশাসনের এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য ক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে । তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধুমাত্র উপাচার্যের হুবহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন, যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে। সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুবি প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯(২)(খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছে। এছাড়াও ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই উপাচার্যের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এরপর ২ আগস্ট কুবি সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও যায়যায়দিনের প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।