কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

শুক্রবার রাতে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

কোটা আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে

প্রথম নিউজ, অনলােইন: কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার রাতে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে হাসপাতালের কেবিন থেকে তুলে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে গতকাল বিকালে সাদা পোশাকের কিছু ব্যক্তি তাদের তুলে নিয়ে যায় বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী মানবজমিনকে নিশ্চিত করেন। হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স জানিয়েছেন, বিকাল ৪টার কিছু পরে তাদের তুলে নেয়া হয়। গত কয়েক দিন ধরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তারা। ছিলেন নজরদারিতে। 

হাসপাতাল সূত্র জানায়, নাহিদ হাসপাতালের ৭ম তলার ৭০৩ নম্বর কক্ষে ছিলেন। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই কক্ষে গিয়ে নাহিদকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া আসিফ ৩য় তলার ৩১১ নম্বর কক্ষে ছিলেন। সেই কক্ষে গিয়েও আসিফকে পাওয়া যায়নি। নাহিদের বোন ফাতেমা তাসলিম মানবজমিনকে বলেন, নাহিদ আর আসিফ মাহমুদকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। তখন আমাকে ধমক দিয়েছে। আমাকে একটা রুমের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে ওদেরকে জোর করে নিয়ে গেছে। তারা প্যান্ট পরতে চেয়েছিল কিন্তু প্যান্টও পরতে দেয়া হয়নি।

লুঙ্গিপরা অবস্থায় নিয়ে গেছে। ওরা ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল। ওরা যেতে চায়নি। পরে ওদেরকে বলছে, আমাদের কথা শোনো। তোমাদের ভালো হবে। না শুনলে তোমাদের খারাপ হবে। তিনি বলেন, নার্স তাদের দিতে চায়নি। নার্স বলছিল, আমার রোগী রিলিজ হয়নি। তাকে আমি কেন দেবো। এটা বলার জন্য তাকে ধমক দিয়েছে। পরে পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে নিয়ে গেছে। 

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই তাদের সঙ্গে কাউকে দেখা করতে দেয়া হয়নি। নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এর আগেও তাদের তুলে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছিলেন। 
গত শনিবার ভোরে রাজধানীর সবুজবাগের একটি বাসা থেকে নাহিদ ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বাম উরু ও কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা ও গভীর ক্ষতসহ রোববার ভোরে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে যাওয়া হয়।

গত ১৯শে জুলাই আসিফ মাহমুদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেয়া হয় বলে পরিবার অভিযোগ করে। পাঁচদিন পর তাকে বাসার কাছে ফেলে যাওয়া হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক ফিরে আসার পর জানান, কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলার সময়ে তাদের আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করতে চাপ দেয়া হয়েছিল।