কুকুরের জন্মদিন পালন করে চোর চক্রের হোতা ধরা

পুলিশ সন্ধান পায় একটি চোর চক্রের মূলহোতার। যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামেই রয়েছে ১০টিরও অধিক মামলা। মামলা রয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন থানায়ও। অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ চোরাই মালামাল।

কুকুরের জন্মদিন পালন করে চোর চক্রের হোতা ধরা

প্রথম নিউজ, বরিশাল: চেহারা আর আচরণে ভদ্র, শান্ত এবং সাবলীল। ভাড়া বাসায় অভিজাত জীবনযাপন। সন্দেহ করার কোনো উপায় ছিল না। তবে কুকুরের জন্মদিন পালন করতে গিয়ে সন্দেহ গাঢ় হয় স্থানীয়দের। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ডালপালা মেলে। বিষয়টি নজরে আনা হয় প্রশাসনের। এরপরই বেরিয়ে আসে ভদ্রবেশী সেই মানুষটির ভিন্নরূপ। 

পুলিশ সন্ধান পায় একটি চোর চক্রের মূলহোতার। যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামেই রয়েছে ১০টিরও অধিক মামলা। মামলা রয়েছে বরিশাল মেট্রোপলিটন থানায়ও। অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের মূলহোতাকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ চোরাই মালামাল।

গতকাল সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে বরিশাল নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাওলানা ভাসানী সড়কের সোহরাফ খান হাউজিংয়ের একটি বাসায় প্রায় তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে চক্রের প্রধান খালিদ হাসান ইমনকে (৩৪) গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে অপর সহযোগী রুবেল হোসেন মৃধাকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার জাকির হোসেন মজুমদার। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ইমনের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বেতমোড় গ্রামে। অপরদিকে তার সহযোগী রুবেল মৃধার বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কয়ারচর গ্রামে। 

অভিযানে জব্দ করা হয় নগদ ৫০ হাজার টাকা, দুটি স্বর্ণের আংটি, স্বর্ণের কানের ঝুমকা এক জোড়া, স্বর্ণের কানের দুল ৪ জোড়া, কানের রিং এক জোড়া, ১৪টি হাতঘড়ি, মোটরসাইকেল একটি, ৩টি এলইডি টেলিভিশন, বিভিন্ন বাহিনীর ট্রাকস্যুট ও বুট জুতা, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল সেট ৮টি, বাটন মোবাইল সেট ৫টি, ডিএসএলআর ক্যামেরা ৫টি, লেন্স একটি, স্বর্ণ পরিমাপ করার ডিজিটাল নিক্তি একটি, কাটার স্ক্রু ড্রাইভারসহ চোরাই কাজে ব্যবহৃত যন্ত্র, চাবির বাক্স ১টি, মোবাইল কাভার ১৫টি, মিউজিক বক্স একটি, মোবাইল সিমের বক্স একটি, মোবাইলের খালি বক্স ৫টি ও পুলিশ সোল্ডার লাইট একটি।

উপ-কমিশনার জাকির হোসেন মজুমদার জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত ইমন স্বীকার করেছেন বরিশালের বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায় সিঁধ কেটে চুরি করতেন। অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ফিশারি রোড এলাকায় ৮টি বাসায় চুরি করে। তার বিরুদ্ধে বরিশালে একটি এবং চট্টগ্রামে ৯টি মামলা রয়েছে। চট্টগ্রামের একটি মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ড হয়। দুই বছর কারাদণ্ড ভোগ করে জামিনে বের হয়ে বরিশালে চলে আসে। এখানে এসেও চুরি অব্যাহত রাখে। তার সহযোগী রুবেল হোসেন মৃধার নামেও বরিশালের বিভিন্ন থানায় একাধিক চুরির মামলা রয়েছে।

সোহরাফ খান হাউজিংয়ের বাসিন্দা এক ব্যাংকার জানান, ৫/৬ মাস ধরেই গ্রেপ্তারকৃত ইমন হাউজিংয়ের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার আচরণে সন্দেহ করা যেত না। তবে রোববার (১৩ নভেম্বর) ইমন তার একটি কুকুরের জন্মদিন পালন করে বিভিন্নজনের মাঝে তেহারি বিতরণ করেন। এরপরই বিষয়টি সকলের নজরে আসে। আরেক বাসিন্দা বলেন, বিষয়টি প্রথমে আমরা আলোচনা করি এবং পরে পুলিশকে অবহিত করি। তারা ছবি দেখে পরে নিশ্চিত হয় খালিদ হাসান ইমন চোর চক্রের হোতা এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom