বরিশালে কলেজছাত্র সোহাগ হত্যায় দুজনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন
প্রথম নিউজ, বরিশাল : বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় কলেজছাত্র সোহাগ সেরনিয়াবাত হত্যা মামলায়র দুজনকে ফাঁসি এবং চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে মামলার অপর ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে বরিশালের জননিরাপত্তা অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টি এম মুসা এ রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-দাদা বাহিনীর প্রধান জিয়াউল হক লালন ও তার সহযোগী রিয়াদ সরদার।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-দাদা বাহিনীর সদস্য বিপ্লব, ওয়াসিম সরদার, মামুন ও ইমরান।
দণ্ডপ্রাপ্ত সবার বাড়ি বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায়।
নিহত সোহাগ সেরনিয়াবাত উজিরপুর উপজেলা সদরের বি এন খান কলেজ সংলগ্ন এলাকার ফারুক সন্যামাতের ছেলে। তিনি বিএন খান কলেজে দ্বাদশ শ্রেনিতে লেখা পড়ার পাশাপাশি ব্যবসা করতেন। বিএন খান কলেজ মোড় সংলগ্ন এলাকায় সোহাগ সেরনিয়াবাতের জামা-কাপড়ের দোকান ছিল।
জানা যায়, রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ইমরান ছাড়া অপর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর কড়া নিরাপত্তা প্রহরায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (বিশেষ পিপি) লস্কর নুরুল হক মামলার রায়ের বরাত দিয়ে জানান, জিয়াউল হক লালন সর্বহারা দলের সদস্য ছিলেন। পরে দল ত্যাগ করে নিজেই দাদা বাহিনী নামে একটি দল গড়েন। ওই দলের প্রধান ছিলেন তিনি নিজেই। ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দাদা বাহিনীর সদস্যরা সোহাগের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। এ ঘটনায় সোহাগের মা শাহনাজ পারভীন বাদী হয়ে হত্যচেষ্টা মামলা দায়ের করলে আরও ক্ষুব্ধ হন দাদা বাহিনীর সদস্যরা। এর জের ধরে ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোহাগকে তার বাড়ির সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কোপানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সোহাগ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকারীরা আগে থেকেই সোহাগের বাড়ির সামনে ওৎ পেতে ছিল। সোহাগ মোটরসাইকেলে বাড়ির সামনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই জিয়াউল হক লালনের নেতৃত্বে দাদা বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় সোহাগের মামা খোরশেদ আলম মিন্টু বাদী হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর উজিরপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর তৎকালীন জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শাহাবুদ্দিন চৌধুরী আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় এ রায় দেন আদালত।