উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে চা খেলেন ‘পলাতক’ ইউপি চেয়ারম্যান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার মাকে মারধরসহ বাড়িতে হামলার অভিযোগে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপর থেকে পুলিশের ভাষ্যমতে মামলার আসামি আশুগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে চা খেলেন ‘পলাতক’ ইউপি চেয়ারম্যান
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার মাকে মারধরসহ বাড়িতে হামলার অভিযোগে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এরপর থেকে পুলিশের ভাষ্যমতে মামলার আসামি আশুগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।

কিন্তু বুধবার (১৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হানিফ মুন্সীর কক্ষে বসে অন্যান্য ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন অভিযক্ত ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা জুড়েই চলছে সমালোচনার ঝড়। আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ মুন্সী বলেন, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কিছুক্ষণ পরিষদে নিজ কক্ষে বসে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে একটি চা-চক্র করেছি। সেখানে সদর ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মামলার পলাতক আসামি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি গত দুই দিন এলাকার বাইরে ছিলাম।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে উপজেলায় ছাত্রলীগের এক কর্মী ফেসবুকে একটি শুভেচ্ছা পোস্টার শেয়ার করেন। ওই পোস্টারের উপরে বড় করে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা এবং নিচে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও দলের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকারের ছবি ছোট করে দেওয়া হয়েছে। এরপাশে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের ছবি দেওয়া হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ও সদর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এরই জের ধরে গত শনিবার (০৯ জুলাই) বিকেলে উপজেলার যাত্রাপুর বাজার এলাকায় চেয়ারম্যান শফিকুল লোকজন নিয়ে প্রথমে ছাত্রলীগ নেতা নাদিমের ওপর এবং পরে নাদিমের বাড়িতে হামলা চালান। এ ঘটনায় গত রোববার রাতে ছাত্রলীগ নেতার বাবা মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামসহ ১৯ জনকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত আশুগঞ্জ উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ মুন্সির কক্ষে বসে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ওই মামলার প্রধান আসামি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আড়াইসিধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু সায়েম, চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফাইজুর রহমান, শরীফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাফি উদ্দীন চৌধুরী, তারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদল ছাদির, দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাসেল মিয়া ও তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোলাইমান সেকান্দর।

জেলা ছাত্রলীগের সদস্য নাদিম মিয়া বলেন, দলের সিনিয়র নেতাদের যথাযথ সম্মান না দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করে জয়ী হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের ছবি সম্বলিত পোস্টার শেয়ার করার ঘটনাটি নিয়ে নিজের ফেসবুকে প্রতিবাদ করি। এর জের ধরে চেয়ারম্যান ও লোকজন হামলা চালিয়ে আমাকে মারধর করে। এখানেই তারা ক্ষান্ত হননি। তারা আমার মাকে মারধর করে আহত করেন। আমার মায়ের হাতের একটি আঙুল ভেঙে গেছে।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজাদ রহমান বলেন, চেয়ারম্যান পলাতক আছেন। ১০-১২ জন আসামির জামিন হয়েছে। তবে এর মধ্যে চেয়ারম্যান নেই। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সীর কক্ষে পলাতক ইউপি চেয়ারম্যানের সভা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা দেখছি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom