ইভিএম একটি নিকৃষ্ট যন্ত্র: বদিউল আলম
তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কাঠগড়ায় ছিল। ইভিএম বিষয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) একটি নিকৃষ্ট যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর সেগুন বাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তথ্যের বিশ্লেষণ উপস্থাপনের লক্ষ্যে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সংবাদ সম্মেলনে থেকে এ কথা জানানো হয়।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমার কাছে বড় প্রশ্ন নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা। নির্বাচন কমিশন তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করে আইন-কানুন বিধি-বিধান প্রয়োগের মাধ্যমে। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দেখা গেছে, চুনোপুঁটিদের ক্ষেত্রে তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আইন প্রয়োগ করেছে, রাঘব বোয়ালদের ক্ষেত্রে তারা আইন প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আত্মসমর্পণ করেছে। নির্বাচন কমিশন যদি আত্মসমর্পণ করে, তাহলে নাগরিকরা যাবে কোথায়। আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য কমিশনার কতগুলো বিষয়ে পরস্পরবিরোধী এবং অসংলগ্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে আমাদের আশংকা।
সুজন সম্পাদক বলেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কাঠগড়ায় ছিল। ইভিএম বিষয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছিল ৬টি আসনে আর ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হয়েছিল পেপার ব্যালটে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী ২৯৪ আসনে যেখানে পেপারব্যালটে ভোট হয়েছে, সেখানে ভোট পড়েছে ৮১ শতাংশ। অন্যদিকে যে ছয় আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছে সেখানে ভোট পড়েছিল ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ ৩০ শতাংশ পার্থক্য, তার মানে যেখানে পেপার ব্যালটে ভোট হয়েছে সেখানে কারসাজি করা হয়েছে, না হয় যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে, সেখানে মানুষকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইভিএম যদি মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সেই ইভিএম ব্যবহারের যৌক্তিকতা কি? ২০১৭ সালে কুমিল্লায় পেপার ব্যালটে ভোট পড়েছিল ৬৪ শতাংশ। এবারে সেখানে ভোট পড়েছে ৫৯ শতাংশ। ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে, বায়োমেট্রিক ছাপ না মেলায় অনেকে বিরক্ত হয়ে চলে গেছে। এখানে ইভিএম মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।
তিনি বলেন, যে কোনো যন্ত্র যা সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত হয়, তাতে কারসাজি করা যেতে পারে। যারা প্রোগামিং করে তারাও কারসাজি (ভোট ডাকাতি) করতে পারে। আবার যেহেতু নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওভার রাইটিং এর ক্ষমতা দেওয়া আছে, তারাও কারসাজি করতে পারে। সব থেকে বড় কথা হচ্ছে এই ইভিএম একটা নিকৃষ্ট যন্ত্র, এটা প্রতিষ্ঠিত। পেপার না থাকার ইভিএমে নির্বাচন কমিশন যে তথ্য দেবে আমাদেরকে তাই গ্রহণ করতে হবে। ইভিএমের গ্রহণযোগ্যতা নির্ভর করে, এর পেছনের লোকের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপরে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, ২০২৩ সালের শেষে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জনগণ চায় এই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হোক। আমরা মনে করি, নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা না ফিরলে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কখনই সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা ফেরানোর প্রয়োজনেই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যথাযথ তদন্ত করে এ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনকে তাদের স্বচ্ছতা প্রমাণ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews