ইউপি নির্বাচনে ‘ভোট দিয়েছেন মৃত ও প্রবাসীরা’
সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে রক্ষিত নৌকা প্রতীকের সিলসহ ৪৪টি ব্যালট পেপার প্রদর্শন করেন।
প্রথম নিউজ,জামালপুর: দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামালপুর সদর উপজেলার তুলশীচর ইউনিয়নে ভোট দিয়েছেন 'মৃত ব্যক্তি ও প্রবাসীরা'। এমন অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের আনারস প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেওয়া চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মমিনুল ইসলাম।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কারচুপি, জালিয়াতি ও কেন্দ্র দখল করে সবশেষে তিনটি কেন্দ্রের ফলাফল পরিবর্তন করে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে। 'মধ্য গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম টেবিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব টেবিরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল না দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চাপে প্রিসাইডিং অফিসার ফলাফল শিট না দিয়ে চলে আসেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মমিনুল আরও অভিযোগ করেন, ‘উপজেলা সদরে আসার পথে সুবিধাজনক স্থানে তিনটি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শহিদুল্লাহ ও তার কর্মী সমর্থকরা ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে উপজেলা কন্ট্রোল রুমে জমা দেন। সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. শহিদুল্লাহকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।’
তিন কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচন দাবি করে তিনি আরও বলেন, পশ্চিম টেবিরচর কেন্দ্রে মোট ভোট ২৮৩৯টি। এ কেন্দ্রে আমাকে শূন্য ভোট দেখিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেখানো হয়েছে ২৭৯৯টি। তেমনি মধ্য গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা মার্কায় ভোট দেখানো হয়েছে ২২১৫টি। এ কেন্দ্রের মোট ২৩২৭ ভোটের মধ্যে আমাকে দেওয়া হয়েছে মাত্র চারটি। একইভাবে পূর্ব টেবিরচর কেন্দ্রে মোট ভোট ২১৬২, এখানে নৌকা মার্কার ভোট দেখানো হয়েছে ২০৫৮টি। আমার অনারস মার্কার ভোট দেখানো হয়েছে মাত্র ৮৩টি। একই কেন্দ্রে ভোট কাস্ট দেখানো হয়েছে ৯৯.০২ শতাংশ ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, পূর্ব টেবিরচর কেন্দ্রে ভাটি গজারিয়া গ্রামের আব্দুল বারেক, পিতা-সেকান্দর আলী; মো. রমেশ, পিতা- মো. হোসেন আলী; শামসুল হক, পিতা-জবেদ সরকার; সুরুজ্জামান, পিতা-তালেব সরকার; আব্দুল গফুর, পিতা-অসিম উদ্দিনসহ অর্ধশতাধিক মৃত ব্যক্তির ভোট কাস্ট হয়েছে।
এছাড়া ভোট কাস্ট হয়েছে ওই গ্রামের বিদেশে অবস্থানরত আবু সাঈদ, পিতা-কুদুস আলী; আনোয়ার হোসেন, পিতা-আজিবর রহমান; মোশারফ হোসেন, পিতা-মোখলেছুর রহমান; শামছুল হক, পিতা-মৃত আয়নাল হক এবং খোকনের (পিতা-লাল মামুদ)।
চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মমিনুল ইসলাম আরও জানান, নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় পূর্ব টেবিরচর কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকরা জোর করে সিল মারতে শুরু করলে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরে ওই কেন্দ্রের মাঠে একটি বইয়ে নৌকা প্রতীকের সিলসহ ৪৪টি ব্যালট পেপার পাওয়া যায়।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে তার কাছে রক্ষিত নৌকা প্রতীকের সিলসহ ৪৪টি ব্যালট পেপার প্রদর্শন করেন।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: