আ.লীগের ওয়ার্ড নেতাও কোটিপতি, ধরাছোঁয়ার বাইরে এখনও

আ.লীগের ওয়ার্ড নেতাও কোটিপতি, ধরাছোঁয়ার বাইরে এখনও

প্রথম নিউজ, জামালপুর : ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামালপুর শহরের ১১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ব্যাংকের টাকা আত্নসাৎ, সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, জুলুম, চাঁদাবজি ও জমি দখল করে কোটিপতির মালিক বনে যান। তার বিরুদ্বে ৪টি মামলা থাকলেও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী যৌথ বাহিনী এখনও তাকে আটক করতে পারেনি।

মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন সোনালী ব্যাংকের একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ছিলেন। ব্যাংকে কর্মরত থাকাকালীন ব্যাংক থেকে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে তার বিরুদ্বে মামলা দায়ের করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফারুক আহমেদ চৌধুরীর হাত ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন।
রাজনীতিতে যোগদানের কয়েক মাসের মধ্যেই আলমগীর হোসেন আওয়ামী লীগের জামালপুর শহরের ১১ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়ে যান। এরপর থেকে তিনি তার একটি নিজস্ব ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ গড়ে তুলেন। এই সন্ত্রাসী বাহিনী ১১ নং ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার, চাঁদাবজি, লুটপাট ও জমি দখল করে নেয়। তার ওয়ার্ডে কোন দোকান বা ব্যবসা বাণিজ্য করতে হলে তাকে দিতে হতো চাঁদা। কেউ চাঁদা দিতে রাজি না হলেই তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদেরকে মারধোর ও অত্যাচার করতো। 
আলমগীর জমি কেনার কথা বলে জমির মালিককে নামমাত্র মূল্যে টাকা দিয়ে জমি দখল করাই ছিল তার মূল ব্যবসা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ৩ থেকে ৪ বছরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তার ওয়ার্ডে বহু মানুষের জোরপূর্বক জমি দখল ও জমি বিক্রির বাণিজ্য করে হয়ে যান কোটিপতি।
জুলা-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গা ঢাকা দিয়েছেন আলমগীর। তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলা হলেও আট মাসেও তাকে ধরতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী যৌথ বাহিনী।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আডভোকেট শাহ্ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আজমসহ অন্যান্য নেতারা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে সেখানে আরাম আয়েশে বসবাস করছে। কিন্তু আমি মনে করি, আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা এখনও দেশেই অবস্থান করছে। তাই তাদের এখনো আইনের আওতায় আনতে না পারা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছি আমরা। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে, আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থার জোর দাবি জানান তিনি।