আবেদন করেও মিলছে না ড্রাইভিং লাইসেন্স

৪ লাখ ড্রাইভিং লাইন্সেস আটকা

আবেদন করেও মিলছে না ড্রাইভিং লাইসেন্স
আবেদন করেও মিলছে না ড্রাইভিং লাইসেন্স

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : আবেদন করেও মিলছে না ড্রাইভিং লাইসেন্স। দীর্ঘদিন ধরে নিষ্পত্তি হচ্ছে না আবেদন। ড্রাইভিং লাইসেন্সের পাশাপাশি যারা গাড়ির লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন তারাও দীর্ঘদিন ধরে পাচ্ছেন না স্মার্ট কার্ড। ঢাকাসহ সারা দেশে প্রায় ৪ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স বিতরণ প্রক্রিয়া ঝুলে আছে। গ্রাহকেরা ঘুরছেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানের বিআরটিএ’র অফিসগুলোতে। বিশেষ করে ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে এর গ্রাহকের আবেদন বেশি বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম ও খুলনাতে আবেদন পড়েছে বেশি। অনেক গ্রাহকের আবেদনের সময় এক বছর হয়ে গেলেও মুঠোফোনে আসেনি কার্ড তৈরি হওয়ার কোনো বার্তা। কার্ড না পাওয়ার কারণে বিআরটিএ থেকে পাওয়া স্লিপ দিয়ে সড়কে গাড়ি চালাচ্ছেন স্ব-স্ব গাড়ির চালকেরা। মূল কার্ড না থাকার কারণে ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে হচ্ছে তাদের নানা ধরনের ঝামেলা। 

কার্ড না পাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। যারা বিদেশে গাড়ি চালানোর জন্য লাইসেন্সের আবেদন করেছেন তারাও অপেক্ষায় আছেন- কখন পাবেন কাঙ্ক্ষিত লাইসেন্স। স্মার্ট কার্ডের পাশাপাশি গাড়ির লাইসেন্সের জন্য যারা আবেদন করেছেন তারাও আছেন ভোগান্তিতে। ২০২২ সালে অনেকেই আবেদন করার পরও তারা এখনও পাননি স্মার্ট কার্ড। 

কর্তৃপক্ষ বলছেন, কার্ড বিতরণ স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই চলছিল। করোনার কারণে কার্ড প্রদানের প্রক্রিয়াটি বিঘ্নিত হচ্ছে। ২০১৬ সাল থেকে বিআরটিএ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান শুরু করে। ৫ বছরে ১৫ লাখ লাইসেন্স সরবরাহের শর্তে ওই বছর টাইগার আইটি নামক একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে বিআরটিএ। কিন্তু, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যেই টাইগার আইটি ১৪ লাখ লাইসেন্স প্রিন্ট করে দেয়। এ সময়ে বিআরটিএ নিয়মতান্ত্রিকভাবে লাইসেন্স সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। শুধুমাত্র জরুরি স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়। ওই সময় থেকেই মূলত জট শুরু হয়েছে স্মার্ট কার্ডের এবং তার রেশ এখনো থেকে গেছে। বেশি পরিমাণ ডেলিভারি দেয়া হলেও জট কমানো যাচ্ছে না। 

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (রোড সেফটি) শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী গতকাল  জানান, ‘করোনায় একবার লাইসেন্স জট লেগেছিল। আবার হলে দ্রুতই সমাধান করা হবে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন যুগ্ম কমিশনার জানান, সড়কে দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তাদের বিআরটিএ’র স্লিপের ব্যাপারে অবগত করেছেন। দ্রুতই যাতে আবেদনকারীদের স্মার্ট কার্ড দেয়া হয় এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বলেছেন, এ জট দ্রুতই কেটে যাবে। 

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২১ সালের মে পর্যন্ত ২০ মাসে প্রায় ১৪ লাখের মতো নবায়ন ও নতুন লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়ে। তবে আবেদন অনুযায়ী লাইসেন্স সরবরাহ করতে পারেনি বিআরটিএ। মূলত তখনই জট প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে বিআরটিএ মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে ৪০ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের চুক্তি করে। ওই কোম্পানি চুক্তির পর যে সব নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়েছিল সেগুলো প্রিন্ট ও সরবরাহ শুরু করে। 

সূত্র জানায়, বিআরটি কর্তৃপক্ষ আগের স্মার্ট কার্ডগুলো ডেলিভারির কাজ সম্পন্ন করতে চাইছেন। এতে যারা নতুন করে আবেদন করেছেন তাদের জন্য স্মার্ট কার্ড পেতে দেরি হচ্ছে। পুরনোগুলো দেয়া হয়ে গেলে নতুন আবেদনগুলো তারা দ্রুতই ডেলিভারি দিতে পারবেন বলে বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন। 

সবুজ নামে এক গাড়ির স্মার্ট কার্ডের আবেদনকারী গতকাল মিরপুরের বিআরটি এর অফিসে জানান, ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। পরীক্ষা দিয়েছেন খিলক্ষেতে। কিন্তু, এখন পর্যন্ত তিনি স্মার্ট কার্ডটি পাননি। তার কাছে  মেসেজেও আসেনি। তিনি আরও জানান, কেন তার ক্ষুদে বার্তা আসেনি এ নিয়ে একাধিকবার তিনি বিআরটিএ অফিসে এসেছেন। কর্মকর্তারা এ বিষয়ে তাকে একটি দরখাস্ত করতে বলেছেন। 

সাগর নামে আরেক গ্রাহক জানান, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন। একাধিকবার বিআরটিএ অফিসে এলেও স্মার্ট কার্ডটি তিনি পাননি। আজিজুল ইসলাম নামে আরেক গ্রাহক জানান, গত বছরের জানুয়ারি মাসে গাড়ির লাইসেন্সের জন্য তিনি আবেদন করেছেন। এখন পর্যন্ত গাড়ির লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ডটি পাননি।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom